পশ্চিম ইউরোপের দেশ পোর্তুগাল আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, এই স্বীকৃতি আগামী রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) কার্যকর হবে। ঠিক তার পরদিন নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন বসছে, যেখানে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান ইস্যুটি আলোচনায় আসবে।
পোর্তুগিজ সংবাদপত্র Correio da Manhã জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টেনেগ্রো এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রেসিডেন্ট ও সংসদের সঙ্গে আলোচনা করেন। দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছরের বিতর্কের পর দেশটিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হলো। ২০১১ সালে প্রথমবার দেশটির বামপন্থি দল Left Bloc সংসদে ফিলিস্তিন স্বীকৃতির প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল।
এর আগে চলতি বছরের জুলাই মাসে পোর্তুগাল জানায়, গাজার যুদ্ধ, মানবিক বিপর্যয় এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান দখলদারিত্বের হুমকি দেখে তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পথে হাঁটছে।
পোর্তুগালের ঘোষণা এসেছে এমন সময়ে, যখন কয়েকদিন আগেই জাতিসংঘের এক তদন্তে বলা হয় যে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান গণহত্যার শামিল। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে অন্তত ৬৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব।
ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়াও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। এছাড়া বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, অ্যান্ডোরা ও আরও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ সৌদি আরব ও ফ্রান্সের আয়োজিত নিউ ইয়র্ক সম্মেলনে বসেই একই ঘোষণা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এতে যোগ হবে বিশ্বের আরও প্রায় ১৪৭টি দেশ, যারা ইতিমধ্যেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যা জাতিসংঘের মোট সদস্য দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এই উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফ্রান্স ও পোর্তুগালের সিদ্ধান্তকে “উদ্বেগজনক” বলে অভিহিত করেন। তার দাবি, এ ধরনের স্বীকৃতি কেবল হামাসের প্রচারণাকে শক্তিশালী করবে।
তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও কূটনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, পোর্তুগালের সিদ্ধান্ত দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পথে নতুন করে গতি আনতে পারে। এটি ফিলিস্তিনি জনগণের দীর্ঘদিনের রাষ্ট্র স্বীকৃতির দাবি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও বৈধতা পেতে সহায়তা করবে।
এফপি/রাজ