Dhaka, Tuesday | 16 September 2025
         
English Edition
   
Epaper | Tuesday | 16 September 2025 | English
নৌকা ভ্রমণে গিয়ে নিখোঁজ, দু’দিন পর নদীতে মিলল মরদেহ
আবাসন খাত রক্ষাই অর্থনীতির সুরক্ষা
১৮ দিন পর হাসপাতাল ছাড়লেন নুর
দেশীয় বাজারে নতুন পারফিউম—‘আফিফা’ নিয়ে এলেন মেহেদী হাসান বাপ্পি
শিরোনাম:

আবাসন খাত রক্ষাই অর্থনীতির সুরক্ষা

প্রকাশ: সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮:৪৯ পিএম  (ভিজিটর : ১৫)
ড. মো. সাদী-উজ-জামান। ছবি: সংগৃহীত

ড. মো. সাদী-উজ-জামান। ছবি: সংগৃহীত

রিয়েল এস্টেট সেক্টর বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি স্তম্ভ। এই খাত যদি সংকটে পড়ে, তাহলে পুরো অর্থনীতিই বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়। তাই আবাসন খাতকে বাঁচানো মানে দেশের অর্থনীতিকে সুরক্ষা দেওয়া। বর্তমানে আমরা নানাবিধ কারণে মন্দার সম্মুখীন। নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়েছে, যেমন-রড ও সিমেন্টের মূল্য প্রায় ২৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত ও মুদ্রাস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি এমন পরিস্থিতি সৃষ্টিতে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে।

এছাড়া অনেক বছর ধরেই সঠিক নগর পরিকল্পনার অভাব, জমির স্বল্পতা ও দক্ষ শ্রমিকের অভাব অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে আবাসন খাতে। বর্তমানে একটি ফ্ল্যাট বা বিল্ডিং নির্মাণের খরচ প্রায় ৩০% বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। আগে মানুষ আবাসনকে অগ্রাধিকার দিলেও এখন বেঁচে থাকার জন্য অন্ন ও বস্ত্রই প্রধান বিবেচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। এছাড়া রাজউকের নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা ড্যাপের নীতিমালাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। ফ্লোর এরিয়া রেশিও (FAR) হ্রাস পাওয়ায় আগে যেখানে ৮-৯ তলা বিল্ডিং নির্মাণের সুযোগ ছিল এখন সেটি ৫-৬ তলায় সীমিত। ফলে জমির মালিকরা তাদের জমি ডেভেলপারদের কাছে হস্তান্তর করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। ডেভেলপাররা যখন দেখছেন যে, নতুন প্রজেক্টগুলো লাভজনক হবে না, তখন তারা বিনিয়োগে অনাগ্রহী হচ্ছেন। বেশির ভাগ কোম্পানি পরিচালন ব্যয় কমানোর চেষ্টা করছে। কর্মী ছাঁটাই করছে, এমনকি বেতনও কমিয়ে দিচ্ছে। সেলস কমে যাওয়ায় কোম্পানিগুলো টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে প্রতিনিয়ত।

সরকারের সঙ্গে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের একটি সমন্বিত বৈঠক জরুরি। ঢাকার জনসংখ্যার চাপ কমাতে জনসংখ্যার বিকেন্দ্রীকরণ (Decentralization) অপরিহার্য। ঢাকার বাইরে স্যাটেলাইট টাউন বা পরিবেশবান্ধব ও সুপরিকল্পিত হাউজিং প্রকল্প গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু সমস্যা হলো, আবাসন প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। রাজউক এ পর্যন্ত প্রায় ৪০টি বেসরকারি আবাসন প্রকল্প (ল্যান্ড প্রজেক্ট) অনুমোদন দিয়েছে এবং জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ এখনো ১টি বেসরকারি প্রকল্পকেও অনুমোদন দেয়নি। আমার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা হলো একটি ‘বেসরকারি হাউজিং প্রকল্প অনুমোদন ভবন’ তৈরি করা হোক, যেখানে অনুমোদনের সব প্রক্রিয়া একই ছাদের নিচে সম্পন্ন হবে।

এছাড়া অনুমোদন প্রদানের আগে কোম্পানিগুলোকে গ্রেডিং (A, B, C) পদ্ধতি প্রণয়ন করে গ্রাহকদের জন্য স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যেতে পারে। সরকার কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বন্ধ করেছে, যা একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। একদিকে এটি টাকা পাচার বাড়িয়ে দিতে পারে যা অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।

আবাসন খাতের সঙ্গে প্রায় ৪০০টিরও বেশি উপখাত জড়িত, যেমন-সিমেন্ট, রড, টাইলস, প্লাস্টিক, ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রী ইত্যাদি। এই সেক্টর মন্দায় পড়লে সংশ্লিষ্ট সব শিল্পই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গত অর্থবছরে আবাসন খাত জিডিপিতে ৮% অবদান রেখেছে এবং প্রায় ৩৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান জড়িয়ে আছে এ খাতকে ঘিরে। আমাদের টিকে থাকতে হলে সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। আমি ২০১৩ সালে দেশের প্রথম প্রফেশনাল রিয়েল এস্টেট ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করি যাতে এই সেক্টরে দক্ষ জনশক্তি তৈরি হয়।

ড. মো. সাদী-উজ-জামান: ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নতুনধরা এসেটস্ লিমিটেড ও নতুনধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড

এফপি/এমআই
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝