নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। দেশের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি শপথ নেন শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাওদেলের কাছে। শপথের পরই তার পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট।
কার্কি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের একমাত্র কাজ আগামী ছয় মাসের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করা। নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৬ সালের ৫ মার্চ।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কার্কি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার একমাত্র ম্যান্ডেট হলো আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা। সেটি বাস্তবায়নেই আমি কাজ করছি।”
তিনি জানান, সুশাসন বা দুর্নীতি প্রতিরোধ নয়, বরং জনগণের দাবি মেনে নির্বাচন আয়োজনই সরকারের অগ্রাধিকার। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে সাম্প্রতিক Gen Z আন্দোলনে যে ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয়েছিল, সেটির মূল দাবি ছিল আগের সরকারের পদত্যাগ, দুর্নীতির অবসান এবং নতুন নির্বাচনের আয়োজন।
অন্তর্বর্তী সরকার শিগগিরই ১০ থেকে ১১ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি নিতে নির্বাচন কমিশন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। প্রয়োজনে দিনরাত কাজ করার কথাও জানিয়েছেন কার্কি।
তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা গড়ে তোলার কোনো উদ্যোগ নেবে না সরকার। কার্কির ভাষায়,
“আমরা কোনো দলের সঙ্গে সমঝোতায় যাব না। কেবল নির্বাচন আয়োজন করব। প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে জনগণ যাকে চাইবে, সে-ই দেশ চালাবে।”
পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তে নেপাল বার অ্যাসোসিয়েশন এবং নেপালি কংগ্রেসসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আপত্তি জানিয়েছে। তবে কার্কি বলেছেন, এসব সমালোচনা আমলে নেওয়া তার কাজ নয়- তার একমাত্র দায়িত্ব নির্বাচন আয়োজন।
কার্কির মতে, পরিস্থিতি এখন “তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।” তবে তিনি আশাবাদী, নির্বাচনের মধ্য দিয়েই রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটবে।
প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুশীলা কার্কির ছয় মাসের নেতৃত্ব নেপালের জন্য হবে পরীক্ষামূলক সময়। তার প্রধান লক্ষ্য একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজন, যা দেশকে আবারও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে ফিরিয়ে আনবে।
এফপি/রাজ