Dhaka, Thursday | 2 October 2025
         
English Edition
   
Epaper | Thursday | 2 October 2025 | English
বৃষ্টি, বই আর এক কাপ কফি—আজ আন্তর্জাতিক কফি দিবস
২০২৬-এর শুরু থেকেই নতুন পে স্কেলে বেতন পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা
বিসিবি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন তামিম
ইলিশ চুরির অভিযোগ, হাত-পা বেঁধে দুই শিশুকে নির্যাতন
শিরোনাম:

মৃত্যুতে হৃদরোগের শীর্ষস্থান দখল

প্রকাশ: সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:০৮ এএম  (ভিজিটর : ২৩)

আজ সোমবার বিশ্ব হার্ট দিবস। ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশনের উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী এ দিবসটি পালিত হবে। এ রোগ সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা ও প্রতিরোধের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। প্রতি বছরের ন্যায় দিবসটি পালন উপলক্ষে জাতীয় হৃদরোগে ইনস্টিটিউট, হার্ট ফাউন্ডেশনসহ সরকারি এবং বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি নিয়েছে। এ রোগের প্রতিকার ও চিকিৎসাসেবা সম্পর্কে সভা, সেমিনার ও র‍্যালি বের করা হবে। কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে রোগী ও অভিভাবকরা হৃদরোগের চিকিৎসা এবং প্রতিকার সম্পর্কে সচেতন হবেন বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। বিশ্ব হার্ট দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্রতিটি হৃদস্পন্দনই জীবন’।

হৃদরোগ বিশ্বের এক নম্বর ঘাতক ব্যাধি। মোট মৃত্যুর তিন ভাগের এক ভাগ হয় হৃদরোগজনিত কারণে। যদিও বাংলাদেশে হৃদরোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান সম্পর্কে সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে তথ্য নেই। হৃদ বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে এ রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বিশ্বের অন্যান্যের তুলনায় অনেক বেশি। কারণ এই রোগ সম্পর্কে বেশির ভাগ লোকের মধ্যে সচেতনতা নেই। খাদ্যাভ্যাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অনেকে ফার্স্ট ফুড খেতে অভ্যস্ত। ব্যায়াম, হাঁটাহাঁটি, খেলাধুলা তেমন করে না। মাদকাসক্তদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি। মাদকাসক্তদের মধ্যে তরুণ বয়সে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। জন্মগত নানা কারণে হৃদরোগ হয়ে থাকে। এই সংখ্যাও বাড়ছে। তবে চাহিদার তুলনায় বাংলাদেশে হৃদরোগের চিকিত্সাব্যবস্থা সীমিত।

রাজধানী ঢাকায় হৃদরোগের আধুনিক চিকিত্সাব্যবস্থা রয়েছে। ঢাকার বাইরে এ রোগের চিকিত্সাব্যবস্থা থাকলেও চাহিদার তুলনায় তা একেবারেই সীমিত। সারা দেশের হৃদরোগীরা ঢাকায় চলে আসছে প্রতিদিন। রাজধানীর সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বিছানা পাওয়া কিংবা সিসিইউতে ভর্তি হওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। হৃদরোগীর চাপে কাকে রেখে কাকে বেড দেবে চিকিৎসক-নার্স এ নিয়ে বিপাকে পড়ে যান। প্রতিটি রোগীর জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চাহিদার তুলনায় সীমিত ব্যবস্থা ও জনবল না থাকায় রোগী তাৎক্ষণিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সরকারিভাবে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রয়েছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট। ১ হাজার ২৫০ বেডের এ হাসপাতাল রোগী চিকিৎসাধীন থাকে তিন সহস্রাধিক। জরুরি বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ সারা দেশ থেকে শত শত রোগী আসছে। বাথরুম ছাড়া কোথাও বেড দেওয়ার মতো জায়গা নেই।

ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. ওয়াদুদ চৌধুরী বলেন, সীমিত জনবল দিয়ে এই বিপুলসংখ্যক হৃদরোগীর চিকিৎসাসেবা তারা দিয়ে যাচ্ছেন। প্রত্যেক রোগীকে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। রোগী আসার সঙ্গে সঙ্গে যে ধরনের পরীক্ষা ও চিকিৎসা দরকার, সেই ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত থাকে জনবল। তিনি বলেন, এ রোগের প্রতিকার উত্তম ব্যবস্থা। মানুষ একটু সচেতন হলে এ রোগ থেকে সহজে মুক্তি পাবে কিংবা রোগে আক্রান্ত হবে না। যেসব কারণে হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে, সেগুলো পরিহার করার পরামর্শ দেন তিনি।

এই ইনস্টিটিউটের বাইরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বৃহত্ করোনারি কেয়ার ইউনিট রয়েছে। যার বেড-সংখ্যা ৩৯টি। পরীক্ষার পর হার্টে রিং লাগানোর ক্যাথল্যাব রয়েছে একটি। আরও একটি ল্যাব প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান। এই হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, রাজধানীতে সারা দেশ থেকে এ হাসপাতালে হৃদরোগী আসছে। চাহিদার তুলনায় সীমিত ব্যবস্থা ও জনবলসংখ্যাও কম। তবে রোগীর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করছেন ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা। জনবলসংখ্যা বৃদ্ধি ও হৃদরোগের চিকিত্সাব্যবস্থা আরও সম্প্রসারণ করা জরুরি। আরেকটি ক্যাথল্যাব চালুর প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।

এছাড়া মিটফোর্ড হাসপাতাল, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে হৃদরোগে চিকিত্সাব্যবস্থা রয়েছে। তবে এগুলোতে চাহিদার তুলনায় সীমিত ব্যবস্থা। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তথ্যানুযায়ী রাজধানী ঢাকায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটসহ সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় ২৫টি হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ আধুনিক চিকিত্সাব্যবস্থা রয়েছে। ঢাকার বাইরে পুরাতন আটটি ও নতুন কয়েকটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং কিছুসংখ্যক বেসরকারি হাসপাতালে এই চিকিত্সাব্যবস্থা রয়েছে। তবে ঢাকার বাইরে চিকিত্সাব্যবস্থা সীমিত পর্যায়ে রয়েছে। সংকটাপন্ন রোগীরা অনেক সময় ঢাকায় আসতে রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্সে মারা যায়। প্রায়দিনই এমন সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল সাফি মজুমদার বলেন, হৃদরোগের প্রতিকার হলো উত্তম ব্যবস্থা। হাইপারটেনশন রোগীদের পাঁচ জনের মধ্যে এক জন হৃদরোগে আক্রান্ত। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, উচ্চ কোলেস্টেরল, ফাস্ট ফুডসহ চর্বিযুক্ত খাবার ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে হৃদরোগে আক্রান্তের হার বাড়ছে। এসব সম্পর্কে সচেতন হলে হৃদরোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। শুধু অসচেতনতার কারণে হৃদরোগ একটি নীরব ঘাতক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঢাকার বাইরে প্রতি শুক্রবার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি বিরাট অংশ প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে যান। এভাবে ঢাকার বাইরে গ্রামাঞ্চলের হৃদরোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছে। এই চিকিৎসাসেবা ব্যয়বহুল। দরিদ্র রোগীদের পক্ষে এই ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব হয় না। অনেকে কয়েক মাস চিকিৎসাসেবা নেওয়ার পর অর্থের অভাবে বন্ধ করে দেয়। সরকার চিকিত্সাব্যবস্থা চাহিদা অনুযায়ী সম্প্রসারণ করলে গ্রামের হৃদরোগীরা হাতের কাছে সুচিকিৎসা পাবে। রোগীদের ঢাকায় আসার প্রয়োজন হবে না বলে জানান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

এফপি/অআ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝