১৪৩টি দল আবেদন করেছিল। যাচাইবাছাই শেষে দুটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নিবন্ধন পাচ্ছে এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ।
দেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধ পেতে যাচ্ছে অভ্যুত্থানের পর তরুণদের নিয়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং আরেক নতুন দল বাংলাদেশ জাতীয় লীগ।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “১৪৩টি দল আবেদন করেছিল। এর মধ্যে ২২টি দলের তথ্য মাঠে পর্যালোচনা হয়েছে। এর মধ্যে দুটো দল-এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছ।”
এর ফলে এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ দলীয় প্রতীক নিয়ে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে।
আখতার আহমেদ বলেন, এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করেছে। এসব দলের বিষয়ে কারো কোনো আপত্তি আছে কিনা, তা জানতে চেয়ে এখন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
আপত্তি থাকলে তা শুনানি শেষে নিবন্ধিত দলের নাম চূড়ান্ত করে গেজেট করা হবে এবং দলটিকে প্রতীকসহ নিবন্ধন সনদ দেওয়া হবে।
এনসিপির প্রত্যাশিত শাপলা নির্বাচন কমিশনের প্রতীকের তালিকায় না থাকায় ইসি ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে যে, দলটি ওই প্রতীক পাচ্ছে না। এখন এনসিপিকে তালিকা থেকে অন্য কোনো প্রতীক নিতে হবে।
আইন অনুযায়ী নিবন্ধন পেতে হলে দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলায় কমিটি থাকতে হয়। প্রতিটি কমিটিতে কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণও দেখাতে হয়।
ইসি সচিব জানান, আরও একটি দল আদালতের আদেশে নিবন্ধন পাবে। তিনটি দলের বিষয়ে ‘অধিকতর পর্যালোচনা’ করা হবে। ৯টি দলের বিষয়ে ‘অধিকতর তথ্যানুসন্ধান’ হবে। আর নিবন্ধন আবেদন করা সাতটি দল বাদ পড়ছে।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলামী পার্টি আদালতের আদেশে নিবন্ধন পাবে।
‘অধিকতর পর্যালোচনা’ হবে বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (শাহজাহান সিরাজ) বিষয়ে।
আর আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল মার্কসবাদী, বাংলাদেশ জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, ভাষানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতা পার্টি বাংলাদেশের বিষয়ে ‘অধিকতর তথ্যানুসন্ধান’ হবে।
বাদ পড়ছে ফরোয়ার্ড পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী- সিপিবিএম, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ, বাংলাদেশ সলিউশন পার্টি, নতুন বাংলাদেশ পার্টি, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলামী পার্টি।
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়। নিবন্ধিত না হলে দলীয় পরিচয় নির্বাচন করার সুযোগ নেই।
এ পর্যন্ত ৫৬টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী আবার নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে। আর আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রাখা হয়েছে।
সব মিলিয়ে এখন দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি।
এফপি/এমআই