নাটোরের লালপুরে ‘জুলাই বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশ, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এ আয়োজনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি আহত জুলাই যোদ্ধা, আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় অংশগ্রহণকারীদের। ফলে স্থানীয়ভাবে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর উপজেলার মোহরকয়া ডিগ্রি পাশ ও অনার্স কলেজের উদ্যোগে এ সেমিনার হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের রাজশাহী আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসর আছাদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা আসলাম এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও আড়বাব ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় ৬০০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। অথচ উপজেলায় গেজেটভুক্ত ৬ জন আহত জুলাই যোদ্ধা, আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া ১৭ শিক্ষার্থীসহ প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত কেউই দাওয়াত পাননি।
আহত জুলাই যোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, “জুলাইয়ের সেমিনারে আওয়ামী নেতাদের উপস্থিতি জুলাইয়ের রক্তের সঙ্গে বেইমানি। আমাদের বাদ দিয়ে যারা দমন করেছিল, সেই আওয়ামী লীগকে দাওয়াত দিয়ে তাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে।”
আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষার্থী ফরহাদ আহমেদ বলেন, “আমরা শুধু আন্দোলন করিনি, নিপীড়নও সহ্য করেছি। অথচ সেই আন্দোলনের সেমিনারে আমাদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। এটা জুলাইয়ের চেতনার অপমান।”
নাটোর জেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল বাকি বলেন, “জুলাই আন্দোলনে আমরা রাজপথে ছিলাম। অথচ যাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, সেই 'জঙ্গী লীগকে' দাওয়াত দিয়ে সেমিনার করা হয়েছে। এটা জুলাইয়ের চেতনার সঙ্গে ভণ্ডামি।”
বিষয়টি নিয়ে মোহরকয়া ডিগ্রি ও অনার্স কলেজের অধ্যক্ষ ইসমত হোসেন জানান, “আসলাম ও মোখলেছুর রহমানকে ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। লালপুরে জুলাই যোদ্ধা আছে— তা আমি জানতাম না। তবে ভবিষ্যতে যদি এ ধরনের অনুষ্ঠান হয়, তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।”
প্রধান অতিথি প্রফেসর আছাদুজ্জামান বলেন, “আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তাই আমি গিয়েছিলাম। তবে কারা আমন্ত্রিত ছিলেন সে বিষয়ে আমাকে জানানো হয়নি। বিষয়টি নিঃসন্দেহে দুঃখজনক।”
এফপি/অআ