বরিশালের গৌরনদীতে স্বাস্থ্যসেবায় দুর্নীতি, দায়িত্বে গাফিলতি, টেস্ট বাণিজ্য ও রোগীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামানের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ করেছে সাধারণ মানুষ।
সোমবার (১৪ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে প্রায় পৌনে ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলে।
এ সময় ‘আমরা ব্যবসায়ী নয়, ডাক্তার চাই’। ‘সরকারি হাসপাতাল নয়, এটা হয়েছে কমিশন ক্লিনিক’। ‘মনিরুজ্জামান হটাও, স্বাস্থ্য সেবা বাঁচাও’ এমন সব প্রতিবাদী স্লোগানে সরব হয়ে ওঠে গোটা মহাসড়ক।
আন্দোলনকারীরা জানান, গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চিকিৎসাসেবার পরিবর্তে ব্যক্তিস্বার্থে কমিশন বাণিজ্যে লিপ্ত রয়েছেন। সরকারি ল্যাব থাকলেও সেখানে প্রয়োজনীয় টেস্ট হয় না। রোগীদের প্রেসক্রিপশনে ‘৭ নম্বর’ লিখে বাইরে নির্দিষ্ট একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠানো হয়। যেখানে তিনি কমিশন পান বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে সাধারণ রোগীদের বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে এবং ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এতে সরকারি হাসপাতালের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হচ্ছে।
পৌর যুবদল নেতা নুর উদ্দিন বুদ্ধি অভিযোগ করে বলেন, ‘ডা. মনিরুজ্জামান সেবা দিতে নয়, কমিশন নিতে হাসপাতালে আসেন। এর আগেও ছাত্রজনতা তার কক্ষ থেকে একাধিক প্রাইভেট ল্যাবের মানি রিসিপ্ট জব্দ করেছে। এমন কর্মকর্তার হাতে স্বাস্থ্যসেবা নিরাপদ নয়।’
প্রতিবাদের একপর্যায়ে আন্দোলনের মুখে কোনো বক্তব্য না দিয়েই চুপিসারে হাসপাতাল ত্যাগ করেন ডা. মনিরুজ্জামান।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে ঘটনাস্থলে আসেন গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিফাত তারা মৌরি এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজীব হোসেন ও প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
তারা আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আপনাদের অভিযোগ গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না হলে আপনারা যে কোনো গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে যেতে পারেন। এসময় প্রশাসনের কোনো আপত্তি থাকবে না বলেও জানান তারা।’
তবে প্রশাসনের এমন আশ্বাসে অবরোধকারীরা আপাতত আন্দোলন প্রত্যাহার করলেও তাদের পক্ষ থেকে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক রুবেল গোমস্তা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আগামীকাল সকাল ১০টার মধ্যে যদি ডা. মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে আর শুধু সড়ক অবরোধ নয়, আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিস ও ভূমি অফিস ঘেরাও করব। প্রশাসনকে জানিয়ে দিচ্ছি আর সময় নাই, এবার জনতার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙবেই।’
এফপি/রাজ