গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া এলাকায় অবস্থিত এম কে ফুটওয়্যার লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভে নেমেছেন।
শনিবার (২৪ মে) সকাল ৮টা থেকে সহস্রাধিক শ্রমিক কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, এপ্রিল ও মে মাসের বেতন না দিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। ছুটি শেষে কাজে যোগ দিতে গিয়ে শ্রমিকরা দেখতে পান, ছুটি আরও বাড়ানো হয়েছে এবং কারখানা বন্ধ রয়েছে।
শ্রমিকদের মধ্যে মনির হোসেন বলেন, এক হাজারের বেশি শ্রমিক গত মাসসহ এই মাসের বেতন না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। সামনে ঈদ আসছে। এ পরিস্থিতিতে বেতন না পেলে শ্রমিকদের সংসার চলবে কী করে?
আরেক শ্রমিক মো. আল আমিন বলেন, মালিকপক্ষ বলছে, তাদের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের টাকা নেই। তাই লাইন কেটে দিয়েছে বিদ্যুৎ অফিস। কিন্তু টাকা ছাড়া শ্রমিকেরা চলবে কীভাবে?
কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. সুমন জানান, সোমবার পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে কারখানা চালু হবে। আমরা মালিকপক্ষ নই, আমরাও সাধারণ কর্মী। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছেন।
শিল্প পুলিশের শ্রীপুর সাবজোনের ইনচার্জ মো. আবদুল লতিফ বলেন, শ্রমিকেরা এপ্রিল মাসের বেতন পাননি। বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলেও জানতে পেরেছি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আমাদের গোয়েন্দা সদস্যরা সেখানে আছেন।
এম কে ফুটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকদের এই বিক্ষোভ গাজীপুরের অন্যান্য কারখানার শ্রমিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ঘটছে। সম্প্রতি, গাজীপুরের স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড ও ইয়াং ওয়ানস বিডি কারখানার শ্রমিকরা ১৪ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় পাঁচজন নারী শ্রমিক আহত হন।
এছাড়া, গাজীপুরের টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় বিএইচআইএস অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা এপ্রিল মাসের বেতন না পাওয়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এই আন্দোলনগুলো গাজীপুরের পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের বেতন বকেয়া ও কারখানা বন্ধের সমস্যার প্রতিফলন।
শ্রমিকদের দাবি, ঈদের আগে বকেয়া বেতন পরিশোধ না হলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবেন। এম কে ফুটওয়্যার লিমিটেডের কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখনও কোনো সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি। এ পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ বাড়ছে।
এফপি/রাজ