Dhaka, Tuesday | 22 July 2025
         
English Edition
   
Epaper | Tuesday | 22 July 2025 | English
খুলনায় বিষাক্ত মদপানে আরও ২ জনের মৃত্যু
টেকনাফে সরকারি ২ লাখ চারা গাছ কেটে ধ্বংস, নীরব রেঞ্জ কর্মকর্তা
পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পেরে বিপাকে কাহারোলের চাষীরা
যুক্তরাষ্ট্র থেকে বছরে ৭ লাখ টন গম কিনবে বাংলাদেশ
শিরোনাম:

লোডশেডিংয়ে অন্ধকারে টেকনাফ, নাকাল জনজীবন

প্রকাশ: শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫, ১:১১ পিএম  (ভিজিটর : ৫৯৮)

কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলা জুড়ে নিত্যদিনের লোডশেডিং এখন সাধারণ মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়া এবং দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, কৃষক, হাসপাতালের রোগীসহ এমনকি অনেকসময় প্রশাসনিক কার্যক্রম পর্যন্ত চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে,এই ভোগান্তির মূল কারণ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অব্যবস্থাপনা, উদাসীনতা ও চরম গাফিলতিকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলার অভিযোগ তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তুলছেন অনেকে।

টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দা কক্সবাজার সিটি কলেজের প্রভাষক এহসান উদ্দিন জানান, কক্সবাজার শহরে আজ সারাদিন একটিবারেরও জন্য লোডশেডিং হয়নি। অথচ টেকনাফে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং! টেকনাফ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহে এতো বৈষম্য কেনো; আদতে সমস্যা কোথায়? বছরের পর বছর টেকনাফের মানুষ বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে কথা বলছেন, অভিযোগ করছেন, তারপরও কোনো ফায়সালা নেই। কীভাবে সুরাহা বা ফায়সালা করা যায়, এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো বয়ান নেই। দায়সারা ভাব।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিদিন ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকার কারণে টেকনাফের প্রতিটি গ্রাম, বাজার ও শহরতলীর মানুষজন এক ধরণের অচলাবস্থার মধ্যে বসবাস করছেন। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর শিশুদের পড়ালেখা থেকে শুরু করে ঘরে ঘরে পানির সংকট, ফ্রিজ, ফ্যান, টিভি, ইন্টারনেটসহ সকল ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি প্রায় অচলাবস্থা হয়ে যাওয়ায় জনজীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, দিনের সবচেয়ে ক্রেতাসমৃদ্ধ সময়টি বিদ্যুৎহীন কাটায় তাদের ব্যবসায়ও সমস্যা হচ্ছে ।

একজন দোকান মালিক বলেন, সন্ধ্যায় দোকানে লাইট না থাকলে মানুষ আসতে চায় না। ফ্রিজে জিনিস রাখা যাচ্ছে না, আইসক্রিম-মাংস-দুধ সব নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিদিন শুধু বিদ্যুতের জন্য কয়েক হাজার টাকা লোকসান গুনছি।

বিশেষ করে টেকনাফের হ্নীলা, হোয়াইক্যং, সাবরাং, বাহারছড়া, শাহপরীর দ্বীপ ও পৌরসভা এলাকার মানুষজন প্রতিদিন বিদ্যুৎ না থাকার কারণে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। হ্নীলার এক শিক্ষক জানান, ছাত্রদের পড়াতে পারি না। বিদ্যুৎ না থাকলে ফ্যান চলে না, গরমে কেউ ক্লাসে বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারে না। বিদ্যুতের জন্য আমরা হাফিয়ে উঠেছি।

পৌর শহরের থেকে গ্রাম এলাকার অবস্থা আরো খারাপ। দিনরাতের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকে না, কিছু সময় থাকলেও একেবারেই লো ভোল্টেজে চলে। ঘুরে না ফ্যানের পাকা। মাঝেমধ্যে গাছ কাটা বা লাইন ক্লিয়ারের অজুহাতে সারাদিন বিদ্যুৎ বন্ধ রাখে। অনেক লাইন ছিঁড়ে পড়ে , ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে যায়, অথচ তা মেরামতে দ্রুত কোনো উদ্যোগ নেয় না। ফোন করলে পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেকসময় ফোন ধরেন না। মাঝেমধ্যে ফোন ধরলেও সাধারণ নাগরিকের অভিযোগের কথা না শুনে ফোনের লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

এদিকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। তারা জানান, একদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই, আরেকদিকে বাড়তি বিল পাঠানো হচ্ছে। নির্ধারিত ইউনিটের চেয়ে বেশি ইউনিট দেখিয়ে বিল চাপিয়ে দিচ্ছে অনেক গ্রাহকের ঘাড়ে। কেউ অভিযোগ করতে গেলেও পাত্তা দেয় না কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগ রয়েছে, টেকনাফের পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে কর্মরত অনেকেই নিজের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেন না। মিটার রিডিং নিতে এসে অনেকে মিটার না দেখে অনুমান করে বিল লিখে নিয়ে যায়। এছাড়া বিদ্যুৎ বিভ্রাট বা যন্ত্রপাতির ত্রুটি হলে তা দ্রুত ঠিক করার কোনো জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করে না । ফলে কোনো বড় সমস্যা হলে তা অনেক সময়ের পর সচল হয়। এতে ভোগান্তি আরো চরম পর্যায়ে পৌঁছে।

শিক্ষক ও এনসিপির সংগঠক, সায়েম সিকদার বলেন, ৫ আগস্টের  পর বাংলাদেশের অন্যন্য সেক্টরে কিছুটা পরিবর্তন হলেও টেকনাফ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো পরিবর্তন হয়নি। দায়সারা ভাব নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্যুতের ব্যবস্থাপনা। এরকম চলতে থাকলে এবং সরকার কোন পদক্ষেপ না নিলে
এদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলা অপরিহার্য হয়ে পড়বে।

জানতে চাইলে লোডশেডিংয়ের বিষয়ে লাইনের ফল্ট ও ভৌগোলিক অবস্থানকে দোষারোপ করে টেকনাফ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম জসিম উদ্দিন বলেন, লাইনে ফল্ট হলে ঠিক করতে দুই তিন ঘন্টা সময় লেগে যায়। দীর্ঘ লাইনের কারণে ভোল্টেজ কম থাকে। রিডিং না দেখে ভুতুড়ে বিল তোলার কথা জানতে চাইলে বলেন, তা সংশোধনের সুযোগ আছে এবং সবকিছুর সুরাহা আছে। কোনো কিছু ইচ্ছা করে করেন না বলে জানান তিনি। 

এফপি/রাজ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝