বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ‘বাঙালি বিলাস’-এর ট্রেলার প্রকাশের পর অভিনেত্রী ফারহানা হামিদকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে পরিচালক এবাদুর রহমান ট্রেলারটি সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন।
চলচ্চিত্রটি ১৮ মে কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের বাণিজ্যিক শাখা মার্শে দ্যু ফিল্মে প্রদর্শিত হয়। ২২ মে সন্ধ্যায় পরিচালক তার ফেসবুক পেজে ৩ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের ট্রেলারটি প্রকাশ করেন। ট্রেলারের শুরুতেই কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রের বিকৃত যৌন অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেখানো হয়। এতে বুদ্ধিজীবী গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাককেও বক্তব্য রাখতে দেখা যায়।
পরিচালক জানান, এই চরিত্রে অভিনয়ের কারণে ফারহানা হামিদকে ফোনে তীব্র ভর্ৎসনা করা হয়েছে। তাকে বলা হয়েছে, তিনি 'ভালগার'ভাবে উপস্থাপিত হয়েছেন এবং বাংলাদেশে তার থাকা উচিত নয়। এসব হুমকির পর ফারহানা নির্মাতাকে বার্তা পাঠান— “ভাই, প্লিজ সেভ মি।”
এই পরিস্থিতিতে নিজের শিল্পীর নিরাপত্তা ও সম্মানের কথা বিবেচনায় রেখে ট্রেলারটি সরিয়ে ফেলেন এবাদুর রহমান। তিনি বলেন, “প্রথম থেকেই আমাদের এই সিনেমাটি নিয়ে নানা ধরনের বিরোধিতা ছিল। এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, শিল্পীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।”
পরিচালক আরও জানান, আপাতত দেশে ‘বাঙালি বিলাস’ মুক্তির কোনো পরিকল্পনা নেই। চলচ্চিত্রটির আন্তর্জাতিক নাম ‘ট্র্যাকটাস বেঙ্গালিয়াম’। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় নির্মিত এই ১৯০ মিনিট দৈর্ঘ্যের সিনেমায় অভিনয় করেছেন ভারতীয় অভিনেত্রী ঋ সেন, ফারহানা হামিদ, নাঈমা তাসনিম, শতাব্দী ওয়াদুদ, আজাদ আবুল কালামসহ আরও অনেকে।
চলচ্চিত্রটি যৌনতা, নারীবাদ, বিশ্বাসঘাতকতা এবং রাজনীতিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। পরিচালক এবাদুর রহমান জানান, “এখানে রয়েছে ‘ফিল্ম-উইদিন-আ-ফিল্ম’ কাঠামো। যেখানে দুটি মুসলিম নারী চরিত্র— মিত্রা ও রুশতী, এক পুরুষতান্ত্রিক নির্মাতার হাত থেকে নিজেদের শরীর ও ভাষার নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ে নামে। ‘বাঙালি বিলাস’ শুধু একটি সিনেমা নয়— এটি একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া।”
এই ঘটনার পর চলচ্চিত্রটির ভবিষ্যৎ প্রদর্শনী ও মুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এফপি/রাজ