যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সিরিয়ার ওপর আরোপিত দীর্ঘস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা শিথিলের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশটির যুদ্ধবিধ্বস্ত অবকাঠামো পুনর্গঠন এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে গতি আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০২৫ সালের ২৩ মে, মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ সিরিয়ার জন্য ‘জেনারেল লাইসেন্স ২৫’ জারি করে। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাআ'র নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার, সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নির্দিষ্ট লেনদেনের অনুমতি দেওয়া হয়। এই লাইসেন্সের আওতায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনসহ মৌলিক সেবার জন্য বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ১৮০ দিনের একটি ছাড়পত্র জারি করেছেন, যা নিষেধাজ্ঞা বিনিয়োগে প্রতিবন্ধকতা দূর করবে এবং মানবিক সহায়তা প্রদানের পথ সুগম করবে।
এই নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিনিময়ে, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কিছু শর্ত উপস্থাপন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—বিদেশি জঙ্গিদের বহিষ্কার, আইএসআইএস-এর বিরুদ্ধে সহযোগিতা, এবং সিরিয়ার অভ্যন্তরে মার্কিন সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনার অনুমতি।
মে মাসে সৌদি আরবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রেসিডেন্ট শারাআ'র মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে একে মানবিক ও অর্থনৈতিক দুর্ভোগ লাঘবের লক্ষ্যে সঠিক পথে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছে । তারা পারস্পরিক সম্মান ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার ভিত্তিতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতায় আগ্রহী বলে জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের পর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও কানাডাও সিরিয়ার ওপর আরোপিত কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে। বিশেষ করে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিরিয়ার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ফলে সিরিয়ার অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত হবে এবং দেশটির জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। তবে, এই পদক্ষেপের দীর্ঘমেয়াদি সফলতা নির্ভর করবে সিরিয়ার সরকারের শর্ত পূরণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর।
এফপি/রাজ