ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক সংঘাত দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। ভারতের ‘অপারেশন সিন্ধুর’ আওতায় পাকিস্তানে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েল ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে আত্মরক্ষার অধিকারে সমর্থন জানিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
গত ৬ মে, ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে বিমান হামলা চালায়। ভারত দাবি করে, এই হামলাগুলো জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তৈয়বার সন্ত্রাসী অবকাঠামো লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে, যা ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পাহালগামে ২৬ জন ভারতীয় হিন্দু পর্যটকের হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ।
পাকিস্তান এই হামলাকে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করে এবং দাবি করে যে, হামলায় মসজিদসহ বেসামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে ২৬ জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হয়েছেন।
ভারতে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত রুভেন আজার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করে বলেন, ‘ইসরায়েল ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে।’
এছাড়া, ইসরায়েল ভারতের আদমপুর বিমানঘাঁটিতে নির্ভুলভাবে লক্ষ্যভেদী বোমা সরবরাহ করেছে বলে জানা গেছে, যা পাকিস্তানের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সংঘাতকে ‘হতাশাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং দ্রুত সমাধানের আশা প্রকাশ করেছেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে উভয় দেশকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন।
চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশও উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।
এই সংঘাতের ফলে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার আকাশপথে বিমান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটেছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলাচল করছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ পাঞ্জাব প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান এই উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি। ইসরায়েলের ভারতের প্রতি সমর্থন এবং অস্ত্র সরবরাহ এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের জন্য চাপ প্রয়োগ করা এবং কূটনৈতিক সমাধানের পথ খোলা রাখা, যাতে এই সংঘাত আরও বিস্তৃত না হয়।
এফপি/রাজ