বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির অধীনে রয়েছে। তবে, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি- যার মোট পরিমাণ প্রায় ১৩০ কোটি ডলার- ছাড়ের বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আইএমএফের সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মিশনে চারটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পূরণে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে।
চারটি প্রধান শর্তে পিছিয়ে বাংলাদেশ
১. রাজস্ব আদায়ের নিম্ন প্রবৃদ্ধি: বাংলাদেশের কর আদায়ের হার জিডিপির তুলনায় এখনও কম। আইএমএফ করনীতি ও প্রশাসনের মধ্যে পরিষ্কার পার্থক্য, কর ছাড় কমানো এবং কর নীতিকে সহজ করার পরামর্শ দিয়েছে।
২. বাজারভিত্তিক বিনিময় হার না থাকা: আইএমএফের মতে, বাংলাদেশকে আরও নমনীয় ও বাজারভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থায় যেতে হবে, যা অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বাড়াবে।
৩. ভর্তুকি হ্রাসে অগ্রগতি না হওয়া: সরকারের বাজেট ঘাটতি কমাতে ভর্তুকি হ্রাসের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তবে, এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
৪. ব্যাংক খাতের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন না হওয়া: আইএমএফ ব্যাংক খাতে আইনগত সংস্কার, সম্পদ মান যাচাই এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা ও সুশাসন জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।
চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ছাড় মূলত ২০২৪ সালের শেষ এবং ২০২৫ সালের শুরুতে নির্ধারিত ছিল। তবে, শর্ত পূরণে পিছিয়ে থাকায় এই কিস্তিগুলোর ছাড় বিলম্বিত হয়েছে। আইএমএফের মিশনপ্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও জানিয়েছেন, আলোচনা এখনও চলছে এবং সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জুনের শেষ দিকে কিস্তিগুলো ছাড় হতে পারে।
বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের ঋণ কিস্তিগুলো অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরকারকে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, বিনিময় হার নমনীয় করা, ভর্তুকি হ্রাস এবং ব্যাংক খাতের সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া, আইএমএফের পরবর্তী বৈঠকে ইতিবাচক ফলাফল অর্জনের জন্য এই শর্তগুলো পূরণে অগ্রগতি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এই প্রেক্ষাপটে, আইএমএফের ঋণ কিস্তি ছাড়ের জন্য বাংলাদেশকে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।
এফপি/রাজ