কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি আদায় ও কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রংপুরে কাফনের কাপড় পরে ও মাথায় সাদা কাপড় বেঁধে গণমিছিল করছে।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) জুমার নামাজ শেষে রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট চত্বর থেকে গণমিছিলটি বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এসময় দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রেস ক্লাব চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
ছয় দফা দাবি আদায়ে বক্তব্য দেন শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান, সাব্বির হোসেন, ফুয়াদ হাসান, রায়হান ইসলাম ও জান্নাতুল মাওয়া প্রমূখ।
এ সময় দ্রুত সময়ের মধ্যে ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামীতে রংপুরসহ সারাদেশ ব্লকেড করার মতো কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুঁশিয়ার দেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি আদায়ে নানাভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে তালবাহানা করছে। তাই নিজেদের দাবি আদায়ে ছুটির দিন শুক্রবারেও আন্দোলন করতে হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, হাইকোর্টের রায়ে অবৈধ ভাবে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতি পাওয়া ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের রায় বাতিল করতে হবে। সেই সঙ্গে পদবি পরিবর্তন ও মামলার সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে কোনো শক্তিই আন্দোলন থেকে হঠাতে পারবে না।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের (১০ম গ্রেড) পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) থেকে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্বেও, যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নস্থ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোতে অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে “কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়” নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইন্সটিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। অবিলম্বে আমাদের ঘোষিত দাবিগুলো মেনে নেওয়া না হলে আরও কঠিন আন্দোলনের জন্য প্রস্তত আছি।
এফপি/রাজ