নওগাঁর মান্দা উপজেলায় আনন্দঘন ও উৎসব মুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে মান্দা উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের কালিসফা গ্রামে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ উৎসব পালিত হয়।
উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আখতার জাহান সাথী। তিনি কেক কেটে বড়দিন উৎসবের সূচনা করেন। এ সময় স্থানীয় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, সুধীজন, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ ও শিশুরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, “সম্মানিত উপজেলাবাসী, আজ শুভ বড়দিন। বড়দিন উপলক্ষ্যে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী সকল জনসাধারণকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহাবস্থানের মাধ্যমে আমাদের মান্দায় যে সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে উঠেছে, তা ভবিষ্যতেও আরও দৃঢ় হবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
বড়দিন উপলক্ষ্যে মান্দা উপজেলার বিভিন্ন চার্চে বিশেষ প্রার্থনা, ধর্মীয় সংগীত, কেক কাটা ও মিলনমেলার আয়োজন করা হয়। চার্চগুলো সাজানো হয় রঙিন আলো, ব্যানার ও ক্রিসমাস ট্রি দিয়ে। শিশুদের জন্য ছিল বিশেষ আনন্দ আয়োজন ও উপহার বিতরণ। সকাল থেকেই চার্চগুলোতে ভক্তদের উপস্থিতিতে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।
বড়দিনের এই আয়োজনে শুধু খ্রিস্টান সম্প্রদায় নয়, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও অংশগ্রহণ করেন। এতে করে মান্দা উপজেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের এক অপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়। উৎসবে অংশগ্রহণকারী অনেকেই বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার—এই চেতনায়ই মান্দায় একসঙ্গে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করে আসছেন।
স্থানীয় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতারা জানান, প্রশাসনের সহযোগিতা ও সবার আন্তরিকতায় প্রতিবছরের মতো এবারও শান্তিপূর্ণভাবে বড়দিন উদযাপন করা সম্ভব হয়েছে। তারা ভবিষ্যতেও এ ধরনের সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সব মিলিয়ে, সম্প্রীতির অপূর্ব মেলবন্ধনে মান্দা উপজেলায় উদযাপিত হলো খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। এই উৎসব আবারও প্রমাণ করল—ধর্ম, বর্ণ ও বিশ্বাসের ভিন্নতা সত্ত্বেও মানবিকতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাই পারে একটি সমাজকে এগিয়ে নিতে।
এফপি/জেএস