বান্দরবানের বালাঘাটা এলাকায় প্রবাসে অবস্থানরত মনোরঞ্জন নামে এক ব্যক্তির জায়গা জোরপূর্বক দখল করে বাগানের অন্তত অর্ধশতাধিক সেগুন গাছ নির্বিচারে কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খাইরুল বশর (৪০) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। প্রকাশ্যে এমন দখলবাজি ও পরিবেশ ধ্বংসের ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় জায়গার মালিক মনোরঞ্জন দাশ (৫৫) বাদী হয়ে খাইরুল বশর এর বিরুদ্ধে বান্দরবান সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত খাইরুল বশর বান্দরবান জেলা সদরের পশ্চিম বালাঘাটা এলাকার হাছি মিয়ার ছেলে।
ভুক্তভোগী মনোরঞ্জন দাশ অভিযোগ করে বলেন, প্রবাসে থাকার সুযোগ নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে ওই জমির ওপর নজর রাখছিল। বিশেষ করে (৫ আগস্ট) এর পর থেকে এক চক্রের তৎপরতা বেড়ে যায়। আমি দেশের বাহিরে থাকার কারণে খাইরুল বশর নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি আমার জায়গায় অনুপ্রবেশ করে বেশ কয়েকবার মূল্যবান সেগুন গাছ কেটে নিয়ে যায়। সর্বশেষ (১৪ ডিসেম্বর) আমার জায়গায় ১৫-২০ জন ভাড়াটে লোক নিয়ে প্রবেশ করে মূল্যবান সেগুন গাছ কেটে বিক্রি করে দেয় এবং জায়গা বেদখল করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। এ ঘটনায় বাগান দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা কেয়াটেকার তাদেরকে বাঁধা দিলে কেয়ারটেকার ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয় খাইরুল বশর নামে ঐ ব্যক্তি। এ ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে জায়গার মালিক মনোরঞ্জন দাশসহ তার কেয়ারটেকার এর পরিবার। তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে আমার বাগান থেকে মুল্যবান সেগুন গাছ কেটে নিয়ে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি করেছে। এ ঘটনার সুষ্টু বিচার এবং খাইরুল বশরের শাস্তির দাবী জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, দিনের আলোতেই গাছ কাটার মতো গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হলেও রহস্যজনক কারণে কেউ বাধা দিতে সাহস পায়নি। অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্তরা নিজেকে প্রভাবশালী পরিচয় দিয়ে এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জমিটির বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও দখলবাজদের দৌরাত্ম্যে তারা অসহায়।
এদিকে ঘটনার পর মনোরঞ্জর দাশ বিষয়টি বান্দরবান সদর থানায় অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কেটে ফেলা কিছু গাছ জব্দ করে।
এ ঘটনায় বান্দরবান বাজারের স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রবাসীদের সম্পত্তি দখলের মতো অপরাধ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি না হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। তাই দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত খাইরুল বশর এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও মোবাইল ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এদিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবান সদর থানার এসআই জান্নাত জানায়, ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা ঘটনাস্থলে যায় এবং সেখান থেকে বেশ কিছু কর্তন করা সেগুন গাছ উদ্ধার করি। পরে সেই কাটা গাছগুলো বাগান মালিককে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে এখনো জায়গার মালিক কোন মামলা করেনি, যদি মামলা দায়ের করে তাহলে আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এফপি/জেএস