আধুনিক জীবনে অনেকেই রাত ৯-১০টার পর ভারি খাবার গ্রহণ করেন। দীর্ঘ কাজের সময়, সামাজিক দায়িত্ব, যাতায়াত বা স্ক্রিনের কারণেও কেউ কেউ দেরিতে খাবার খান।
তবে সাম্প্রতিক গবেষণা ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য-বিশ্লেষকের পরামর্শ বলছে, নিয়মিত দেরিতে বা ভরপেট খাবার গ্রহণ শরীরের জন্য নানা সমস্যার কারণ হতে পারে।
গবেষণা অনুযায়ী, রাতে দেরিতে খাবার খাওয়া, কিংবা বিশেষ করে ঘুমের একটু আগে খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এই অভ্যাস শুধুমাত্র হজম বা ওজনের ওপর প্রভাব ফেলে না, বরং হৃদরোগ ও মেটাবলিক সিস্টেমকেও প্রভাবিত করে।
ঘুমের ঠিক আগে খাবার খেলে, শরীর একই সঙ্গে হজম ও ঘুমের কাজ পরিচালনা করতে চেষ্টা করে। এতে শরীরের অভ্যন্তরীণ ছন্দ বিঘ্নিত হয়ে একাধিক সিস্টেমে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। দীর্ঘমেয়াদে, এই অভ্যাস হৃদরোগ, গ্লুকোজ অসহিষ্ণুতা এবং ধমনী ক্ষতির মতো সমস্যার দিকে পরিচালিত করতে পারে।
এর তাৎক্ষণিক প্রভাব হলো অ্যাসিড রিফ্লাক্স, যা গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ নামেও পরিচিত। শুয়ে থাকা অবস্থায়, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পাকস্থলীর উপাদানগুলোকে নিচে রাখতে সহায়তা করে না। ফলে অ্যাসিড সহজে পাকস্থলীর বাইরে চলে আসে এবং খাদ্যনালীকে জ্বালিয়ে দেয়, যার ফলে হার্টবার্ন হয়।
রাতে দেরিতে খাবার ঘুমের ধরণকেও ব্যাহত করে। হজম শক্তি বিশ্রাম নেওয়ায় ঠিকমত ঘুমও বাধাগ্রস্ত হয়। গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন, ঘুমের এক ঘণ্টার কম আগে খাবার বা পানীয় গ্রহণ করলে ঘুমের এক ঘণ্টার মধ্যে কাছাকাছি জেগে যাওয়া বা ব্যাঘাত ঘটার শঙ্কা দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
খাবারের সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়ার ফলে মেটাবলিক হার ধীর হয়ে যায়। এতে দৈনন্দিন কাজের জন্য শক্তিও কমে যায়। ফলে, শরীর খাওয়া খাদ্য শক্তিতে প্রক্রিয়াজাত করার পরিবর্তে বেশি মজুদ করে। এতে ধীরে ধীরে ওজন বৃদ্ধি পায় ও স্থূলতা দেখা দেয়। যা হৃদরোগের জন্যও প্রধান ঝুঁকি তৈরি করে।
এফপি/অ