চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা চাঁদাবাজি ও অনিয়ম এখন আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন। তাঁর দাবি—সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বন্দরের কার্যক্রম এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি স্বচ্ছ ও দ্রুত গতিসম্পন্ন।
সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের এক বছরের অগ্রগতি তুলে ধরার অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, একসময় বন্দরের প্রতিটি ধাপে অবৈধ টাকা লেনদেন ছিল নিয়মিত ঘটনা। প্রতিদিনই দেড় থেকে আড়াই কোটি টাকার মতো অর্থ বিভিন্নভাবে আদায় হতো। ট্রাক দাঁড়ালেই চাঁদা, কনটেইনারের অবস্থান বদলালেই চাঁদা—এভাবে প্রায় সব জায়গায়ই অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হতো।
তবে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “বন্দরের চাঁদাবাজি আগের তুলনায় অনেকটা কমেছে। এখন কাজের গতি বেড়েছে, সময় কম লাগছে এবং ব্যবসায়ীরাও এই পরিবর্তনে সন্তুষ্ট। যেখানে আগে কোনো কাজ শেষ করতে দিনের পর দিন লেগে যেত, এখন অনেক কাজ এক দিনেই হয়ে যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, অতীতে চট্টগ্রামের মেয়ররা অনেক সময় বন্দর প্রশাসনের ওপর অতিরিক্ত প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করতেন। বন্দরকে “সোনার ডিম পাড়া মুরগি” ভেবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করত। কিন্তু এখন পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পানগাঁও বন্দরের প্রসঙ্গেও উপদেষ্টা ইতিবাচক মন্তব্য করেন। তিনি জানান, আগে এই বন্দরটি সরকারের জন্য বড় ধরনের লোকসানের কারণ ছিল, কিন্তু বর্তমানে সেখানে সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার ফলে লাভের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনা এবং এটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় তিনি এ নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে চান না। তবে তিনি জানান, বড় মাপের আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
সবশেষে তিনি প্রশ্ন তোলেন—“দুর্নীতি কি কোনো দেশে পুরোপুরি নির্মূল করা যায়?”—তবে একই সঙ্গে আশ্বস্ত করেন যে বন্দর ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তন অব্যাহত থাকবে।
এফপি/জেএস