ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ'র পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তার প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি কোন রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচন করবেন তা এখনও নিশ্চিত করেননি।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন কলাপাড়া উপজেলা কমিটি থেকে অব্যহতি পাওয়া জেড এম কাওসার, মাওলানা মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও মো. আসাদুজ্জামান ইউসুফ সহ মুফতি হাবিবুর রহমানের অনুসারীরা। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণার মাধ্যমে পটুয়াখালী-১ ও পটুয়াখালী-৪ আসনে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সংবাদ সম্নেলনে লিখিত বক্তব্যে হাবিবুর রহমান বলেন, তার জন্মভূমি হচ্ছে পটুয়াখালী-০৪ আসন। অথচ তার ইচ্ছা না থাকা সত্বেও দলের মুহতারাম আমির চরমোনাইর পীর সাহেব তাকে পটুয়াখালী ১ আসনে নির্বাচন করার জন্য নির্ধারন করে দেন। এ কারনে তিনি প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং স্ট্রোক করে তিনি বুঝতে পারেন এ অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ায় তার হৃদয়ের রক্তনালী ছিড়ে গেছে। তাই তিনি ফিরে এসেছেন তার জন্মভূমিতে। কারণ তিনি ২০০০ সাল থেকে অদ্য পর্যন্ত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কলাপাড়া উপজেলার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
২০১১ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পটুয়াখালী জেলার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা, কোরআন শিক্ষা বোর্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সহ এ এলাকায় একাধিক ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এবং সামাজিক উন্নয়ন কাজে অংশগ্রহন করেন। তবে যে স্বপ্ন নিয়ে তিনি এলাকার জনগনের দ্বারে দ্বারে গিয়েছেন, রাজনৈতিক বেড়াজালে টাকার ও শক্তির রাজনীতির কারনে সেই জনগনকে তিনি ছেড়ে যেতে পারে না।
তিনি পটুয়াখালী-৪ আসনের ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থীকে উদ্দেশ্যে করে আরও বলেন, হঠাৎ করে দলচ্যুত হয়ে নতুন দলে এসে এমপি হওয়ার জন্য দৌড় ঝাপ শুরু করেছেন, সেই নেতার অত্র অঞ্চলের মানুষের প্রতি কতটুকু দায়বদ্ধতা আছে, কতটুকু আন্তরিকতা আছে এবং কতটুকু নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আছে এর বিবেচনা তিনি জনগনকে করার অনুরোধ করেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ নির্বাচনে তিনি এমপি নির্বাচিত হতে পারলে এলাকার মানুষের পাশে থাকবেন এবং আগামী দিনে তিনি এ অঞ্চলের (কলাপাড়া, মহিপুর ও রাঙ্গাবালী) চাঁদাবাজ, দখলবাজ, দূর্নীতি বাজ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষকে সাথে নিয়ে রুখে দাড়াবেন। বর্তমানে তিনি যেভাবে সাধারন জীবন যাপন করছেন, এর চেয়ে বেশি বিলাসী জীবনযাপন করবেন না, গাড়ি হবে না, বাড়ি হবে না তিনি যা আছেন তাই থাকবেন।
এর আগে বিকালে তিনি শতাধবিক মোটরসাইকেল নিয়ে কলাপাড়া পৌর শহরে শোডাউন দেন।
এ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কলাপাড়া উপজেলা শাখার সদস্য সচিব মাওলানা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, একজন হককানে কওমী ঘরানার আলেম হয়েও মুফতি হাবিবুর রহমানের এমন কাজে আমরা বিস্মিত হয়েছি। তাকে আমরা তার স্বপদে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবো। তারপরও যদি সে বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচন করতে চায় তাহলে তার বিরুদ্ধে আমাদের দল সিদ্ধান্ত নিবেন।
এফপি/জেএস