সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে রুমা আক্তার (২০) এক গৃহবধূর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর মা রোকসানা আক্তার (৩৯) বাদী হয়ে শনিবার (৬ই ডিসেম্বর) রাতে গৃহবধূর স্বামীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ধর্মপাশা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এ মামলায় স্বামী কামরুল ইসলামকে রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ভোর রাত সাড়ে পাঁচটার দিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ওই গৃহবধূর স্বামীর বাড়ি ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের বগারপাছুর গ্রামে। তাঁর বাবার বাড়ি পার্শবর্তী মোহনগঞ্জ উপজেলার বরতল- বানিহারী ইউনিয়নের সুকদেবপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে। স্বামী কামরুল ইসলাম ছাড়াও অভিযুক্ত আসামিরা হলেন তাঁর পিতা দ্বীন ইসলাম (৫৫) ও তার মাতা কুলসুমা বেগম (৪৮)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর আগে ২০২৪ সালে ইসলামী শরিয়াহ মতে রুমা আক্তারের সঙ্গে কামরুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর রুমা অন্তঃসত্ত্বা হলে প্রসবের জন্য গত নভেম্বর মাসে তাকে বাবার বাড়িতে নেওয়া হয়। প্রসবকালে দুর্ঘটনাবশত নবজাতক কন্যা শিশুর মৃত্যু হয়। পরে রুমা সুস্থ হয়ে পুনরায় স্বামীর বাড়িতে ফিরে যান।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়, সন্তানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন রুমাকে দোষারোপ করে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। বিষয়টি মীমাংসার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি।
গতকাল (৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের বগারপাচুর গ্রামে স্বামী কামরুল ইসলামের শয়নকক্ষে সবার অগোচরে গলায় রশি প্যাঁছিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন রুমা। পরে তাকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ রাত ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মরদেহ উদ্ধার ও সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে।
নিহতের মা রোকসানা আক্তার (৩৯) বলেন, দীর্ঘদিনের মানসিক নির্যাতনের কারণেই তার মেয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচিত হয়েছে। তিনি এই মৃত্যুর সঠিক বিচার চান।
এ বিষয়ে ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসির অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ইমাম হোসেন বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং নিহতের স্বামী কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এফপি/জেএস