সরকারি হাসপাতালসমূহে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের পদমর্যাদা ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের দাবিতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে সম্মিলিত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের উদ্যোগে এ মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ফার্মাসিস্ট মো. মাহবুবুর রহমান, ডেন্টাল টেকনোলজিস্ট রিফাত পাঠান, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আশাদুল ইসলাম সবুজ, ফার্মাসিস্ট খোকন পাটোয়ারী, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং টেকনোলজিস্ট সাজ্জাদুল ইসলাম মিলন, প্যাথলজি বিভাগের সোলাইমান হোসেন, ফার্মাসিস্ট ফারুক মিয়া প্রমুখ।
এসময় সংহতি প্রকাশ করে যোগ দেন ডেন্টাল সার্জন ডা. শাকিব খন্দকার এবং সিনিয়র স্টাফ নার্স ফজলুল হক। এতে হাসপাতালে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্যসেবার রোগ নির্ণয়, চিকিৎসাসেবা প্রদান ও ঔষধ ব্যবস্থাপনার মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা বহুদিন ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে আসছেন। উপজেলা হাসপাতাল থেকে শুরু করে মেডিকেল কলেজ, বিশেষায়িত হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের অবদান অপরিহার্য। অথচ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এ দুই পেশাজীবী বৈষম্যের শিকার হয়ে ন্যায্য গ্রেড থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
তারা বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা একটি টিমওয়ার্ক। চিকিৎসক-নার্সদের পাশাপাশি টেকনোলজিস্টরা রোগ নির্ণয়ের গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি সম্পন্ন করেন, যা চিকিৎসার মূলভিত্তি। একইভাবে ফার্মাসিস্টরা ঔষধ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারপরও দীর্ঘদিন ধরে তারা নিম্ন গ্রেডে কাজ করে আসছেন।’
বক্তারা জানান, ১৯৮৯ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে ১০ম গ্রেড প্রদানের প্রস্তাব করা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। জনপ্রশাসন বিধি শাখার চাহিদা পূরণ হওয়ার পরও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, কোয়ারি ও সদিচ্ছার অভাবে বিষয়টি ঝুলে আছে। সম্প্রতি পদোন্নয়ন নিয়ে আলোচনার খবর এলেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রের তথ্য তুলে ধরে বক্তারা বলেন, সারাদেশে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের মোট পদ ৭৭১৯টি। এর মধ্যে ৫৬৪৬ জন ইতোমধ্যে ১০ম গ্রেডের চেয়েও উচ্চ বেতনভুক্ত। মাত্র দুই হাজারের কম কর্মী এই সুবিধার আওতায় আসবেন, যা সরকারের আর্থিক চাপও খুব কম। পদোন্নয়ন বাস্তবায়নে কোনো বিধিমালা, কাঠামো বা চেইন অব কমান্ডের পরিবর্তন লাগবে না বলেও অধিদপ্তর নিশ্চিত করেছে।
তারা অভিযোগ করেন, ‘ফাইলটি সব ধাপ শেষ করে এখন শুধু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। তবুও বাস্তবায়ন হচ্ছে না—এটাই দুঃখজনক।’
মানববন্ধনে বক্তারা সরকারের প্রতি এক সপ্তাহের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানান। একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে কেন্দ্রীয় সংগঠনের ঘোষিত কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মবিরতিসহ কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।
এফপি/অ