Dhaka, Friday | 5 September 2025
         
English Edition
   
Epaper | Friday | 5 September 2025 | English
তানোরে মহানগর ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ, ২ লাখ টাকা জরিমানা
কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলার বিয়ের বাহন পালকি
জয়পুরহাটে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিহত
জাতির সেবায় আনসার-ভিডিপির ৬০ লাখ সদস্য সবসময় প্রস্তুত: মহাপরিচালক
শিরোনাম:

কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলার বিয়ের বাহন পালকি

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২:৩৭ পিএম  (ভিজিটর : ১১৫)

বাক বাকুম পায়রা, মাথায় দিয়ে টায়রা, বউ সাজবে কাল কি, চড়বে সোনার পালকি। ছড়াটিতে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকি সংস্কৃতির কথা মনে করিয়ে দেয়। নেত্রকোনা জেলায় বিয়ের বর ও কনের বহনের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি এখন আর দেখা যায় না।

শোনাও যায় না ‘চতুর দোলাতে চড়ে বধূ যায় হুন্না, হুন্না’। ৪০-৪৫ বছর পূর্বে দেশে বিয়ের সময়ে অত্র এলাকায় একমাত্র ব্যবহার হতো পালকি। পালকি ঘিরে কত হাসি তামাশার গল্প আজও শোনা যায় দাদা-দাদি বা মায়ের কাছ থেকে- তা নিতান্তই রোমাঞ্চকর বটে। নানা ঘটনার সাক্ষী এই পালকি আজ হারিয়ে গেছে। 

এবিষয়ে লাল মিয়া, আব্দুল করিম সহ কয়েকজন জানান, আমরা ছোট বেলায় দেখেছি পালকি যাতায়াতসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হতো। এই বাহনে এক বা দুইজন যাত্রী নিয়ে পালকি ব্যবহার করা হতো। এটিকে কাঁধে তুলে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যেত ৪ বা ৮ জন বাহক। রাতে বিবাহ হতো ভোরবেলা পালকিতে করে বর ও কনেকে ৮ জন বাহক দিয়ে দীর্ঘ রাস্তা পাড়ি দিয়ে তাদের নিয়ে আসা হতো। সেকি আনন্দ তা আজ আর নেই। আসার পথে বাহকরা বর-কনেকে নিয়ে বিভিন্ন ছন্দে ছন্দে গান পরিবেশন করে গ্রামগঞ্জের রাস্তা পাড়ি দিত। অপরদিকে বরের বাড়িতে কুলোতে ধান দূর্বা নিয়ে নববধূকে বরণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত বরের মাতা ও বোনেরা।

পালকিতে চড়ে বর ও কনে বাড়িতে পৌঁছানো মাত্রই ধান ও দূর্বা ছিটিয়ে তাদের বরণ করত এবং বাড়ির লোকজনরা কাদামাটি ও রং ছিটিয়ে উল্লাস করত। সেই রংবেরঙের পালকির সন্ধান আর নেই। আধুনিক যানবাহন আবিষ্কৃত হওয়ার আগে অভিজাত শ্রেণির লোকেরা পালকিতে চড়েই যাতায়াত করত। বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে ও অন্যান্য শুভ অনুষ্ঠানে বর-কনের জন্য পালকি ব্যবহারের প্রথা চালু ছিল। 

এছাড়াও অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসালয়ে নেওয়ার জন্য পালকি ব্যবহার হতো। পালকি বিভিন্ন আকৃতি ও ডিজাইনের হয়ে থাকে। সবচেয়ে ছোট সাধারণ পালকি দুইজনে ব্যবহার করে। সবচেয়ে বড় পালকি বহন করে ৪-৮ জন বাহক। পালকির বাহকরা এর পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন কাজ করত। বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ১০-১২ দিন পূর্ব থেকেই পালকির বাহকদের ও মালিকদের বুকিং করে রাখা হতো। তবে পালকি সচরাচর তিন ধরনের হয়ে থাকে। সাধারণ পালকি, আয়না পালকি ও ময়ূরপঙ্খী পালকি। ওইসব পালকিতে কাঠের তৈরি পাখি, পুতুল ও লতাপাতা নকশা দিয়ে তৈরি হতো।

এদিকে গ্রাম বাংলার প্রাচীন ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে অবস্থানকালে তার জমিদারি কাছারি পরিদর্শনের সময় পালকি ব্যবহার করতেন। ১৯৩০-এর দশকে শহরাঞ্চলে রিকশার প্রচলন হওয়ার পর থেকে পালকির ব্যবহার ক্রমশ উঠে যায়। যোগাযোগব্যবস্থা ক্রমাগত প্রসার, সড়ক ও নদীপথে মোটর ও অন্যান্য যান চলাচল এবং প্যাডেল চালিত রিকশা জনপ্রিয় হওয়ার ফলে পালকির ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।

এফপি/রাজ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝