Dhaka, Friday | 22 August 2025
         
English Edition
   
Epaper | Friday | 22 August 2025 | English
৮০ শতাংশ বিবাহিত পুরুষ মানসিক নির্যাতনের শিকার, প্রতিকার মেলে না কোথাও
টঙ্গীতে জায়গা সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বাবাকে কুপিয়ে জখম
সাগর-রুনির সন্তান মেঘের হাতে পূর্বাচলের প্লটের দলিল হস্তান্তর
ইতিহাসের ওপর মব আক্রমণ চলছে: সারা হোসেন
শিরোনাম:

সিলেটে সাদাপাথর লুট

দুদকের তালিকায় ৪২ নেতা–ব্যবসায়ী, কমিশন খেতেন ডিসি–এসপি

প্রকাশ: শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫, ১০:১৬ এএম  (ভিজিটর : ২৪)

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র থেকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এ অবৈধ ব্যবসায় জড়িত রয়েছেন অন্তত ৪২ জন রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। পাশাপাশি প্রশাসন, পুলিশ ও বিজিবির কিছু কর্মকর্তার নিষ্ক্রিয়তা ও আর্থিক সুবিধা নেওয়ার তথ্যও উঠে এসেছে।

গত ১৩ আগস্ট দুদকের সিলেট কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাতের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল সাদাপাথর এলাকায় এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালায়। ওই অভিযানে সংগৃহীত তথ্য প্রতিবেদনের আকারে ঢাকায় পাঠানো হলে বিষয়টি বুধবার প্রকাশ্যে আসে।

দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর থেকে সাদাপাথর এলাকায় নির্বিচারে পাথর উত্তোলন চলেছে। কয়েক শ কোটি টাকার পাথর লুট হয়ে গেছে। বর্তমানে এলাকাটি অসংখ্য গর্ত ও বালুচরে পরিণত হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতি ট্রাকে অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথরের বাজারমূল্য প্রায় ৯১ হাজার টাকা। এর মধ্যে ১০ হাজার টাকা কমিশন হিসেবে ভাগ হয় স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের মধ্যে। বারকি নৌকা থেকেও ৫০০ টাকা করে নেওয়া হতো। এই অর্থ জেলা প্রশাসক, ইউএনও, সহকারী কমিশনার (ভূমি) থেকে শুরু করে এসপি, ওসি ও থানা পুলিশের মধ্যে বণ্টন হতো।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনানসহ থানার একাধিক পুলিশ সদস্যকেও এ ঘটনায় সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুদক। তবে সিলেটের এসপি মাহবুবুর রহমান বলেন, “এ তথ্য প্রমাণ করা দুদকের দায়িত্ব। মনগড়া অভিযোগ দিয়ে হবে না।”

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাথর লুটে সংশ্লিষ্ট ৪২ জনের মধ্যে বিএনপির ২১ জন, জামায়াতের ২ জন, এনসিপির ২ জন এবং আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ৭ জন রয়েছেন। বাকি ১১ জন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও ব্যক্তি।

তালিকায় থাকা বিএনপি নেতাদের মধ্যে রয়েছেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিন, যুবদল নেতা সাজ্জাদ হোসেন ওরফে দুদু, রুবেল আহমদ বাহার প্রমুখ। আওয়ামী লীগের কর্মী বিলাল মিয়া, শাহাবুদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিনের নামও রয়েছে।

জামায়াতের আমির ফখরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীনসহ আরও অনেকে আছেন তালিকায়। এনসিপির জেলা প্রধান নাজিম উদ্দিন এবং মহানগর সমন্বয়কারী আবু সাদেক চৌধুরীকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিলেটের সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ দায়িত্ব পালনে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। তাঁর অধীনে থাকা কোম্পানীগঞ্জের ইউএনওরাও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি। বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবীও ৮ জুলাই এক বৈঠকে “সারা দেশে পাথর তোলা যাবে, সিলেটে কেন নয়?” মন্তব্য করায় লুটে উৎসাহ জুগিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে দুদক।

তবে কমিশনার দাবি করেছেন, তিনি শুধু ইজারা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন, চুরি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে। একইভাবে বিজিবির তিনটি ক্যাম্প থেকেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে তারা চুপ থেকেছে।

অভিযুক্ত রাজনৈতিক নেতারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিএনপি ও জামায়াত নেতারা একে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন। এনসিপির নেতারাও নিজেদের সম্পূর্ণ নির্দোষ বলে জানিয়েছেন।

দুদক বলেছে, এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধানের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যারা ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে।

এফপি/রাজ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝