Dhaka, Sunday | 27 July 2025
         
English Edition
   
Epaper | Sunday | 27 July 2025 | English
বাংলাদেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ
চলে গেলেন অফিস সহকারী মাসুমাও, নিহত বেড়ে ৩৫
মেঘনার পানি বিপদসীমার ওপরে, চাঁদপুরে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
পিরোজপুরে বৃদ্ধার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
শিরোনাম:

সরকারি জমিতে বনবিভাগের কফিশপ

প্রকাশ: শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫, ৬:১৭ পিএম  (ভিজিটর : ১৬৪)
ছবি: ফিন্যান্সিয়াল পোস্ট

ছবি: ফিন্যান্সিয়াল পোস্ট

হিমছড়ি এলাকা মেরিন ড্রাইভ বেষ্টিত হওয়ার জন্য ব্যবসায়িদের কাছে বেশ কদর থাকার কারণে সড়কের পাশে থাকা বনের ও খাস খতিয়ানের জায়গাতে ব্যবসা করতে অনেকেই মরিয়া হয়ে উঠেছে। এমন কিছু মাফিয়াদের কাজের বাস্তবায়ন করছে বনবিভাগের কিছু অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারি। সরকারিভাবে বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা স্থাপনা তৈরি করে নামমাত্র মূল্যে নির্ধারিত মানুষের কাছে ইজারা দিয়ে জমি বা স্থাপনা বুঝিয়ে দেয় আবার অগোচরে সরকারি জমি অবৈধ দখলদারদের হাতে তুলে দেওয়া এ যেন নিত্যদিনের কাজ।

মেরিন ড্রাইভের পাশে বনবিভাগের শত একর জমি থাকলেও তা ধরে রাখতে পারেনি কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগ। বিভিন্ন উপায়ে মানুষের দখলে দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা যায়। অন্যদিকে  হিমছড়ি জাতীয় উদ্যানের পেছনে বেশ কিছু বনের জায়গা দখল করে বসতঘর তৈরি করেছে অবৈধ দখলদাররা। কোন রকম তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দায়সারা ভাব নিয়ে আছে বনবিভাগ।

ঠিক তেমনি সরকারি জমিতে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগ কফিশপসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করছে বলে জানা গেছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে জানা গেছে, যে জমিতে কফিশপ বা স্থাপনা তৈরি করছে তা ১নং খাস খতিয়ানের জায়গা। সরকারি ১নং খাস খতিয়ানের জমিতে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহারের জন্য কফিশপ তৈরি করছে খবর পেয়ে রামু উপজেলা প্রশাসন গত বৃহস্পতিবার অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগ বাধাঁ দেয়। বনবিভাগ জানায় জায়গাটি বনবিভাগের, তাই তারা সেখানে কফিশপসহ নানা ধরণের স্থাপনা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এদিকে অভিযানের দায়িত্বে থাকা সহকারি কমিশনার (ভুমি) সাজ্জাদ জাহিদ রাতুল জানান, বিশেষ সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি, সরকরি জমিতে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। খবর পেয়ে আমার উর্দ্ধতন স্যারদের সাথে কথা বলে অভিযান পরিচালনা করতে আসলে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের লোকজন বাঁধা হয়ে দাড়ায়। তাদের বুঝাতে চেষ্টা করি এটি সরকারের ১নং খাস খতিয়ানের জমি এবং এখানে কোন প্রকার ভবন করা যাবেনা। কিন্তু তারা বনবিভাগের জমি দাবি করে আমার অভিযানে বাঁধা প্রদান করে।

বনবিভাগ কর্মকর্তাদের কাগজ দেখাতে বললে তারা কোন ধরণের কাগজ দেখাতে না পারায় অভিযান চলমান রাখতে গেলে বনবিভাগের কর্তাবাবুরা এসিল্যান্ডকে গায়ের জোরে তা বন্ধ করতে বলেন। ঠিক এভাবে সরকারি জায়গায় বিভিন্নভাবে মানুষের হাতে অবৈধভাবে দখল করে দিচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে হিমছড়িতে বনের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা তৈরির খবর পাওয়া যাচ্ছে। কিছু রিসোর্ট এবং অন্যান্য স্থাপনা সরকারি বনভূমি ও খাস জমিতে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে এমন খবর পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে প্রশাসন ও বন বিভাগের মধ্যে বিরোধ দেখা যাচ্ছে এবং কিছু ক্ষেত্রে স্থাপনা উচ্ছেদও করা হয়েছে এমনটা নজরে এসেছে। সম্প্রতি রামু উপজেলা প্রশাসন হিমছড়িতে বেশ কিছু জায়গা অভিযানের মাধ্যমে উদ্ধার করলেও বনবিভাগের তেমন উদ্যোগ নজরে আসছে না বলে জানান সচেতন মহল।

সচতেন মহলের অভিযোগ, বনের জায়গার হাজার একর অবৈধ দখলে রয়েছে, কেউ ঘর করে আবার কেউ ব্যবসায়িক কাজে দোকান করে ব্যবসা করে যাচ্ছে দিব্যি। একটি মহল বলছে বনের জায়গায় ঘর বা দোকান যাই করুক না কেন বনবিভাগকে ম্যানেজ করেই করতে হয়। বনর্তাকে ম্যানেজ না করলে অভিযান আর ম্যানেজ হলে ঘর দোকান যা ইচ্ছে করা যায়।

ঠিক তেমনি হিমছড়ি বাজারে রয়েছে বেশ কিছু বনের জায়গা। এখন বেশ দামি হওয়ার কারণে বেশ চড়া দামে বনবিভাগকে বিভিন্ন উপায়ে ম্যানেজ করে সেখানে দোকান করে ব্যবসা করে যাচ্ছে ব্যবসায়িরা। এ নিয়ে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের কোন মাথা ব্যথা নেই। এদিকে হিমছড়ি নিসর্গ ঝরনার পাশে বনবিভাগ নিজে ব্যবসা করার জন্য  কফিশপ তৈরি করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

জানা যায, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে কিছু দিনের জন্য গা ঢাকা দেয় এই মারমেইড সোহাগ। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এ সব জমি উদ্ধারে উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. সালাহ উদ্দিনের নির্দেশে গত বছরের ২১ নভেম্বর দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে প্রায় ৬ একর সরকারি জমি দখলমুক্ত করা হয়। রামু উপজেলার সহকারী কমিশনার সাজ্জাদ জাহিদ রাতুলের নেতৃত্বে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয়। সৈকত দ্বিখণ্ডিত করে নির্মিত কাঠের সেতু ভেঙ্গে দেয়া হয়। অভিযানে বালুচরে গড়ে তোলা অন্তত ৩০টি অবৈধ কটেজ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সৈকতে ঝাউবিথী কেটে স্থাপনা নির্মানের ঘটনায় বনবিভাগ বাদী হয়ে মারমেইড বীচ রিসোর্ট কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়ের করলেও মামলার কোন অগ্রগতি নেই। এছাড়া পরিবেশের ক্ষতি করায় পরিবেশ অধিদপ্তরও একটি মামলা দায়ের করেছে বলে জানা যায়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম সোহেল বলেন, হিমছড়ি ঝরনাটি বন বিভাগের পক্ষে ইজারা দেওয়া হয়। আর এই ঝরনার সামনের বাজার, পার্কিং ইজারা দেয় রামু উপজেলা প্রশাসন।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, যে জমিতে কফিশপ তৈরি হচ্ছে তা বনবিভাগের জায়গা। আমরা তা পর্যটক আকৃষ্ট করতে এধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুল ইসলাম জানান, এখানে বন বিভাগ এবং প্রশাসন দুপক্ষের জায়গা আছে। আমরা দুপক্ষ সরকারের স্বার্থে কাজ করছি। বিষয়টি নিয়ে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে বন বিভাগের ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। আমি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে এর নিরসন করেছি। তিনি আরও বলেন, এখানে বিরোধের কিছু নেই; দুপক্ষই তো সরকারের জন্য কাজ করছে।

এফপি/এমআই
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝