বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চাঁদপুরের মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেল থেকে নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে গিয়ে জেলার সদর ও হাইমচর উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারের সময় পানি স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় তিন ফুট বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর জানিয়েছে, বিকালে জোয়ারের সময় মেঘনার পানি বিপদসীমার পয়েন্ট থেকে ২১ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। ফলে পুরানবাজার, হানারচর, বাখরপুর, হরিণা ফেরিঘাটসহ আশপাশের এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। পানিতে তলিয়ে গেছে সড়ক, দোকান, বাড়িঘর ও মাছের পুকুর।
পুরানবাজার রনাগোয়াল এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, “বিকালের পর বাতাস বেড়ে গেলে নদীতে ঢেউ ওঠে। পানি উঠে আমাদের দোকানে ঢুকে পড়ে। মালপত্র সরিয়ে নিতে হয়েছে।”
সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা মনির শেখ জানান, “ফেরিঘাটের রাস্তায় এখন পানি। নিচু এলাকায় সড়কও ডুবে গেছে।”
বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ গাজী বলেন, “সেচ প্রকল্পের বাইরে থাকা বাড়ি, রাস্তা ও পুকুরে পানি ঢুকে গেছে। আমার পুকুরেও পানি ঢুকেছে, মাছ ভেসে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।”
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপের কারণে জোয়ারের সময় পানির উচ্চতা ১ থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত বাড়বে বলে আগেই সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, নদীর পানি বাড়লেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কর্মকর্তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সতর্ক রয়েছেন।
এদিকে সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, “সেচ প্রকল্পের বাইরে থাকা মাছ চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তাদের মাছ রক্ষায় সতর্ক করা হয়েছে।”
হাইমচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আশরাফুল হক জানান, জুলাই মাসের মিটিংয়ে মৎস্য চাষিদের ২৪ থেকে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে পানি বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। মাঠপর্যায়ে জেলেদের সতর্ক করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নজরদারি অব্যাহত থাকবে। প্লাবিত এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে।
এফপি/রাজ