Dhaka, Friday | 18 July 2025
         
English Edition
   
Epaper | Friday | 18 July 2025 | English
বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে স্টারলিংকের যাত্রা শুরু
হারিয়ে যাচ্ছে সুন্দরবন উপকূলে তালগাছ, রোপণে নেই আগ্রহ
জুলাইযাত্রা—কুবি ইতিহাসের এক ভয়াবহ অধ্যায়
আজ ফ্রি ১ জিবি ইন্টারনেট পাবেন যেভাবে
শিরোনাম:

১৮ জুলাইয়ের খড়তাপ

জুলাইযাত্রা—কুবি ইতিহাসের এক ভয়াবহ অধ্যায়

প্রকাশ: শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫, ৪:৫০ পিএম  (ভিজিটর : ১০৮)
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) ফাইল ছবি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) ফাইল ছবি

বর্ষাকালীন বিদ্রোহের মাস 'জুলাই'-এর শুরুটা হয়েছিলো সরকারি চাকুরিতে কোটার ভিত্তিতে অংশগ্রহণের ফলে সৃষ্টি হওয়া বৈষম্য বিলোপের দাবীর মাধ্যমে। রক্তবর্ণের লালমাটির ক্যাম্পাস কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের-(কুবি) 'জুলাইযাত্রা' শুরু হয়েছিলো ৪ জুলাই ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করার মাধ্যমে৷

কুবিতে প্রথম পুলিশ হামলা করে ১১ জুলাই। ধীরে ধীরে আন্দোলনের গতি বাড়তে থাকে। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ক্রমান্বয়ে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীরাও কুবি শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে স্বতস্ফুর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে। শেখ হাসিনার স্বৈরাচারি বাহিনীর রক্তচক্ষু তোয়াক্কা করেনি তারা।

সেদিনটা ছিলো বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই‚ ২০২৪) জুলাইয়ের অন্যান্য দিনগুলোর মতোই প্রখর খড়তাপের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল‚ শহর ও আসেপাশের ছাত্রাবাস থেকে ক্যাম্পাস-গেটে জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। শুরু হয় কোটবাড়ি বিশ্বরোড অভিমুখে পদযাত্রা। তীব্র দাবদাহ থাকা সত্ত্বেও প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ হেটে শিক্ষার্থীরা পৌঁছায় কোটবাড়ি বিশ্বরোডে।

কোটবাড়ি বিশ্বরোডে আগে থেকেই অস্ত্রসজ্জিত গাড়ি নিয়ে প্রস্তুত পুলিশ‚ র‍্যাব‚ বিজিবি সহ বিশেষায়িত ইউনিট। সকল শিক্ষার্থীর বুকে চাপা কষ্ট। শহীদ আবু সাঈদ, ওয়াসিমের ঘাতকরা চোখের সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। ক্ষোভে ফুসে উঠা শিক্ষার্থীদের কয়েকজন ‘ভুয়া‚ ভুয়া’ বলে দুয়োধ্বনি দেয় ও ইট ছুড়ে মারে।

একই সময় শুরু হয় শিক্ষার্থীদের উপর হাসিনার পোষা পুলিশ‚ র‍্যাব‚ বিজিবির অতর্কিত হামলা। টিয়ারশেল‚ সাউন্ড গ্রেনেড আর শটগানের ফায়ারিংয়ের শব্দে আর ধোয়ায় ছেয়ে যায় চারিদিক। শিক্ষার্থীরা ছুটতে থাকে দিগ্বিদিক। নারী শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ আশ্রয় নেন লোকালয়ে। সেখানেও তাদের চোখেমুখে ভয়‚ লোকালয়ের দিকেও মারা হয় টিয়ারশেল। এমনকি বাধা দেয়া হয় এ্যাম্বুলেন্সকে।

সেদিন অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়। সেদিন কেউ চোখ হারায় কেউ আজীবনের জন্য শরীরে পিলেট গেঁথে নেয়‚ কারো বুক ঝাঝড়া হয়ে বিধে উঠে গুলির ফোয়ারা। এমনকি পুলিশের গুলিতে আহত হয় খোদ পুলিশ সদস্যরাই। রাস্তায় ওপাশে বসে হত্যাকান্ড পরিচালনার নির্দেশ দিচ্ছিলেন রক্তপিপাসু তৎকালীন সংসদ সদস্য আখম বাহার ও তার কন্যা তাহসিন সূচনা।

সেদিন সাড়ে বারোটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত চলে যৌথ বাহিনীর একটানা গুলিবর্ষণ, টিয়ারগ্যাস ও গ্রেনেড নিক্ষেপ। গুলির রসদ ফুরিয়ে এলে এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ধাওয়া করেন তাদের৷ কৌশলে বাইকের তেল দিয়ে আগুন লাগানো হয় সাজোয়া যানে।

সেই ভয়াবহ দিনে কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোড সংলগ্ন এলাকায় আশ্রয় গ্রহণ করে নারী সহ বহু আহত শিক্ষার্থী। অনেক শিক্ষার্থীকে শুকনো খাবার ও ইন্টারনেট সেবা প্রদান করেন এলাকাবাসী। সন্ধ্যার আগমুহূর্তে ধীরে ধীরে ক্যাম্পাসের দিকে ফিরে আসতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

ক্যাম্পাসে ফিরে দেখা যায় হলের বিদ্যুৎ সংযোগ ও গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অসহায় শিক্ষার্থীরা সেদিন আশ্রয় গ্রহণ করে আশেপাশের মেসগুলোতে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কৌশলে বাসায় পাঠিয়ে দিতে বরাদ্দ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস।

এসকল ভয়াবহতার মধ্যেও থেমে ছিলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদি স্পৃহা। থেকে যান আশেপাশের মেসসহ কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন বাসাবাড়িতে। কেউ কেউ আশ্রয় গ্রহণ করে টিউশন করানো গার্ডিয়ানের বাসায়। এভাবেই এগিয়ে যেতে থাকে বর্ষাদ্রোহ। তছনছ করে দেয়া হয় স্বৈরাচারের ভীত। জুলাই বিপ্লবে অনন্য অবদানের সাক্ষর রাখেন কুবির অদম্য শিক্ষার্থীরা।

এফপি/এমআই
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝