নাটোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বাজারে আমের দাম কমে গেছে। এতে একদিকে ভোক্তারা কিছুটা স্বস্তি পেলেও বিপাকে পড়েছেন আমচাষীরা। গত কয়েক দিনে আমের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
এছাড়া সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে অনেক আম নষ্ট হয়েছে, সে কারণেও দাম পড়ে গেছে। চাষীরা একসঙ্গে আম পেড়ে বিক্রি করতে বাজারে আনছেন, এটাও একটি বড় কারণ।
বাগাতিপাড়া, লালপুর, রাজশাহীসহ বৃহত্তর উত্তরাঞ্চল থেকে প্রতিদিন ট্রাকে করে টনকে টন আম দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে যাচ্ছে।
বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় মোট ১২১০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ১৪,৭৬১ মেট্রিক টন।
বাগাতিপাড়ার মালঞ্চি ও তমালতলা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেখানে কয়েকদিন আগেও গোপালভোগ আম ৮০-১০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল, এখন তা নেমে এসেছে ৪০-৫০ টাকায়। হিমসাগর, ল্যাংড়া, রূপালী ও মল্লিকা আমের দামেও একই ধরনের পতন দেখা যাচ্ছে। লক্ষণভোগ আম বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। ফজলি আমের ক্রেতা নেই বললেই চলে, ফলে গাছেই কিংবা আড়তে পচে যাচ্ছে এই জাতের আম।
চাষীদের অভিযোগ, “উৎপাদন খরচ বাড়লেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না তারা। পাইকারদের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ, পরিবহন ব্যয় এবং সংরক্ষণের অভাবকে দায়ি করছেন তারা। স্থানীয় আমচাষি মনিরুল ইসলাম মাখন বলেন, "আমের দাম এত কম যে আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। খরচই উঠছে না।”
অন্যদিকে, ভোক্তারা বলছেন, বছরের এই সময়ে কিছুটা সস্তায় আম কিনতে পারায় তারা খুশি। তবে সরকারিভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকলে প্রতিবছরই এমন পরিস্থিতি দেখা দেবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মালঞ্চি বাজারের মেসার্স সোমাইয়া ট্রেডার্স নামের একটি ফলের আড়তের মালিক শরিফুল ইসলাম সুজন জানান, আমের ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে অনেক আম আড়তেই পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. ভবসিন্ধু রায় বলেন, আমের দাম কমার কারণ হিসেবে অতিরিক্ত সরবরাহ, পরিবহন সমস্যা এবং ঈদের ছুটি- এই কয়েকটি বিষয়কে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। আমের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে তারা কাজ করছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, খুব শিগগিরই পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং সারাদেশে আমের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।
ফজলে রাব্বি, বাগাতিপাড়া, নাটোর