কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দলা গ্রামে রফিকুল ইসলাম জোতির বসতবাড়ি ষড়যন্ত্র মূলক দখলকে কেন্দ্র করে বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাটসহ হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী।
সোমবার (২ জুন) জেলা পাবলিক লাইব্রেরি কিশোরগঞ্জের দ্বিতীয় তলার অডিটোরিয়ামে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনি নিজ বাড়িতে বসবাস করতে পারছেন না। তার দাবি, ধলা বাগপাড়ার একটি প্রভাবশালী ও সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট তাঁর বসতভিটা, গাছপালা, ও সম্পত্তি দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত। তারা একাধিক হত্যা মামলার আসামি এবং এলাকার ভয়ংকর অপরাধী চক্রের সদস্য।
তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জ জজ কোর্টে ১৪৪/১৪৫ ধারার মামলা চলমান থাকলেও অভিযুক্তরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তাঁর জমিতে জোরপূর্বক বিল্ডিং নির্মাণ করছে এবং ইতোমধ্যেই তাঁর প্রায় ৭০/৭৫টি রেন্টি, মেহগুনিসহ বিভিন্ন মূল্যবান গাছ কেটে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার ক্ষতি করেছে।
গত ২৯ মে তাঁর বসতঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে বলে তিনি জানান। ঘরের চালা, টিন খুলে নিয়ে যাওয়ার এই ঘটনায় তাড়াইল থানার পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে রফিকুলের ভাগিনা খোকন এ ঘটনায় আব্দুর রহমান ও সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, যখন তিনি তাড়াইল থানায় মামলা করতে যান তখন অভিযুক্তরা শতাধিক লোকজন নিয়ে তাঁকে আক্রমণের পরিকল্পনা করে তাড়াইল বাজারে হাজির হয়। থানা থেকে আগাম সতর্ক বার্তা পেয়ে তিনি প্রাণ বাঁচাতে কিশোরগঞ্জ শহরে পালিয়ে আসেন। এ ঘটনার পেছনে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতারও সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং অতীতেও এই চক্র একাধিক হত্যা ও লুটপাট মামলায় জড়িত ছিল। এর আগে তিনি ২০২৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর একটি সাধারণ ডায়েরি এবং ২৯ ডিসেম্বর কোর্টে একটি মামলা করেছিলেন। উল্টো তাঁর বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়, যেটি তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
উল্লেখ্য, যে অভিযুক্তরা গত ০১ তারিখে একটি হত্যার ঘটনা ঘটায়। যা হেলানা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আরেকটি হত্যা মামলার ঘটনা ঘটনায় ১২ এপ্রিল ২০২০ এ ঘটনায় বাবুল মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও নবাব বাদী হয়ে একটি লুটপাট ও ভাংচুরের মামলা করেন। এতেও আসাদ মিয়া, পিতামৃত ইব্রাহিম, ওয়ান্তর মিয়া, কালাম, কাঞ্চন উল্লেখিত মামলার আসামি। বর্তমানে তাদের সাথে গোপনে বৈটক করে শহিদ হোসেন, আব্দুর রহমান, ওহাব, লাল মিয়া, সুজন মিয়া ও আবু বক্কর তারা সংঘবদ্ধ হয়ে আমার জমির উপর ঘরবাড়ি নির্মাণ এবং আমার নির্মিত ঘরবাড়ি ভাংচুর, লুটপাট করে দখল করার পায়তারায় লিপ্ত হয়েছে এবং সেইসাথে আমাকে মেরে ফেলারও ষড়যন্ত্র করছে।
রফিকুল ইসলাম জ্যোতি আরও বলেন, একটি গ্রাম্য সালিশে শহিদ হোসেন তার জমি ১৬ লক্ষ টাকায় কেনার প্রস্তাব দেন এবং ১ লক্ষ টাকার একটি চেক প্রদান করেন। সালিশে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দলিল সম্পাদনের প্রতিশ্রুতি থাকলেও প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে উল্টো জমিতে ঘর নির্মাণ শুরু করে এবং তাঁকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র চালানো হয়। তিনি আরো বলেন, শহিদ হোসেন, আব্দুর রহমান, ওহাব, লাল মিয়া, সুজন মিয়া ও আবু বক্কর এই সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী তাঁকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে এবং একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। এমনকি এলাকার মসজিদের ইমামকে তাঁর বাড়িতে রাখার কথা বলে জোরপূর্বক স্বাক্ষরও নেয়া হয়।
রফিকুল ইসলাম জোতির সংবাদ সম্মেলনে গ্রাম্য মাতাব্বরদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান মুসলিম উদ্দিন, আ: গনি ভুইয়া, নুরুল ইসলাম, গনি মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও দাবি জানান এবং ষড়যন্ত্রকারী দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।
এফপি/রাজ