কক্সবাজারের রামুর রশিদ নগরে ঈদগাঁও বাজারগামী গরুর গাড়ি আটকিয়ে চাঁদা দাবির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (৩১ মে) বিকাল তিনটার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার- মহাসড়কের রামু’র রশিদ নগর মামুন মিয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভূক্তভোগি গরু ব্যবসায়ী বাদশাহ জানান, ৩০ ইসিবি থেকে নিলামে নেয়া গরু নিয়ে ঈদগাঁও বাজারে যাওয়ার পথে মহাসড়কের বর্নিত স্থানে পৌঁছা মাত্রই রশিদ নগর ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি চক্র গরুবাহী গাড়ির গতিরোধ করে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেলে চাঁদাবাজচক্র পালিয়ে যায়।
অভিযোগ উঠা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব অভিযোগ ষড়যন্ত্র বলে দাবি করলেও গাড়ি আটকিয়ে কাগজপত্র দেখছে বলে স্বীকার করেন।
এবিষয়ে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ তৈয়বুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে এরকম কোন সংবাদ পাননি, পেলে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান কতিপয় নেতা ঈদগাঁও বাজারগামী কোরবানির পশু আটকিয়ে কয়েকদফা চাঁদা আদায় করেছে। এর মধ্যে প্রথম ঘটনাটি ঘটে ৬ মে বিএনপিপন্থী দুই জনপ্রতিনিধির পরোক্ষ ইন্ধনে উপজেলা প্রশাসন দেড়শতাধিক গরু মহিষ অবৈধ অভিযোগ তুলে বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও চারদিন আটকে রেখে গরু ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে হাতিয়ে নেয় এবং পরে উপজেলা প্রশাসন পশুগুলো ছেড়ে দেয় বলে গুরুতর অভিযোগ উঠে। যা তখন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হলে তোলপাড় শুরু হয়।
এ ঘটনার রেশ না কাটতেই গত ২৮ মে বুধবার ঈদগাঁও ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি চক্র বাজারগামী গরু প্রকাশ্যে আটকিয়ে লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে গরু গুলো ছেড়ে দেয় বলে গরু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। যা পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রচার হলে দলটির নেতা কর্মীদের এহেন জঘন্য অপরাধ অব্যাহত থাকায় সাধারণ জনগণের মাঝে দলটির প্রতি নীতিবাচক ধারণা তৈরি করছে। এ ঘটনার রেশ না কাটতেই রশিদ নগরে পুনরায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল।
জেলার বাণিজ্যিক নগরী খ্যাত ঈদগাঁও গরু বাজারের ব্যবসায়ীরা অব্যাহত চাঁদাবাজির শিকার হওয়াতে ব্যবসায়ীরা এ বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ব্যবসার নিরাপত্তা না থাকাতে আগামীতে কোন ইজারাদার এবারের মত চড়া রাজস্বে এ বাজার ইজারা নেয়ার আগ্রহ হারালে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিবে।
তাই ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এফপি/রাজ