ওসমানীনগর ও জগন্নাথপুর থানার উত্তর কালনীরচর গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে আদিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে খালিক মিয়া (৩৮) নামের একজন নিহত সহ উভয়পক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
নিহতের পিতার নাম মৃত তেরা মিয়া। তিনি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের উত্তর কালনিরচর গ্রামের তেরা মিয়ার ছেলে।
আহতরা হলেন, সিজুল মিয়া (৪০), জামাল মিয়া (৪০), রয়িদ মিয়া (৪৫), রাশেদ আহমদ (২৭), লুৎফুর রহমান(৩৮), কয়েছ মিয়া (২৮), রাব্বি (২৩), আতাউর রহমান (৩৩), হারুন মিয়া (৫০), রুহেল আহমদ (৪২) আলমগীর হোসেন (৩৫), আলী হোসেন (২২), খনকার মিয়া (৫০), সেলিম আহমদ (২৫), ইমান আলী (২৬), রেজন আহমদ (৩০), আলাল আহমদ (৩২), ফুজায়েল আহমদ(১৪) ও নাঈম আহমদ (২২)।
আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল ও নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে জগন্নাথপুর থার উত্তর কালনীরচর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনার পর গ্রামে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। খবর পেয়ে ওসমানীনগর সার্কেল এর এএসপি আশরাফুজ্জামান, ওসমানীনগর থানার ওসি মো. মোনায়েম মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জানা যায়, গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে জগন্নাথপুর থানার খালিদ মিয়ার বাড়িতে উভয়পক্ষ দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একে অপরকে আক্রমণ করতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। বৃষ্টিমুখর দিনে উভয়ই একে অপরকে ঘায়েল করতে মরিয়া হয়ে মারামারিতে লিপ্ত হন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষে ২০জন আহত হন এবং খালিদ মিয়ার চোখে সুলপির ঘা লাগলে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান। বাকি আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
খালিদ মিয়ার পক্ষের রুহেল আহমদ জানান, দীর্ঘদিন ধরে জুনায়েদ, আকাইদ, মেন্দি মিয়া, বিলাল ও সিজুল গংদের অত্যাচার ও হামলায় খালিদ মিয়া তার ভাইদের নিয়ে বাড়ি ছেড়ে সিলেট জেলার অংশের উত্তর কালনীরচর গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতেন। শনিবার সকালে তার অসুস্থ মা ও ছেলেকে দেখতে গেলে প্রতিপক্ষরা দেশিয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে হামলা করে তাকে হত্যা করেছে। হামলার খবর পেয়ে আমরা তাকে উদ্ধার করতে গেলে আমাদেরকেও তারা মেরে আহত করেছে।
জুনায়েদের পক্ষের বিলাল আহমদ বলেন, দুপুরের দিকে আমাদের লোকজন গরু আনতে গেলে খালিদ মিয়া ও তার লোকজন আমাদের উপর আক্রমন করে। এতে আমাদের ৮/১০জন আহত হয়েছেন। গ্রামের মসজিদের উন্নয়ন কাজে তারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে তাদের সাথে আমাদের মনোমালিন্য রয়েছে। তারা ওসমানীনগর অংশে বাস করেন। তাদের আলাদা মসজিদ রয়েছে তবুও তারা আমাদের এখানে এসে সমস্যার সৃষ্টি করে থাকেন।
জগন্নাথপুর থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, উত্তর কালনীরচর গ্রামে একটি মার্ডার হয়েছে জেনেছি। সংঘর্ষ এড়াতে গ্রামে পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।
উল্লেখ্য ২০১৭ সালে ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়েছিল কালনীচর গ্রাম। নির্বাচনী সহিংসতায় পৃথক সংঘর্ষে কালনীচর গ্রামে দুই ব্যক্তি নিহত হন।
এফপি/রাজ