Dhaka, Wednesday | 28 May 2025
         
English Edition
   
Epaper | Wednesday | 28 May 2025 | English
‘রাজাকারের বেকসুর খালাসকে উদযাপন করে আমাদের ভোট চান?’
মিরপুরে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারদের মধ্যে হাতাহাতি
শেরপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার ২
জাপান পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
শিরোনাম:

কক্সবাজারে তৈরি হচ্ছে আধুনিক জেটিঘাট

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫, ১১:৪৯ পিএম  (ভিজিটর : ১৪৬)

দেশের একমাত্র পাহাড়ঘেরা দ্বীপ উপজেলা কক্সবাজারের মহেশখালীতে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌপথ। প্রতিদিন হাজারও মানুষের যাতায়াত এই নৌপথে। পর্যটন মৌসুমে যা বেড়ে হয় কয়েক গুণ।

কিন্তু জীর্ণ জেটির কারণে এই দ্বীপ উপজেলায় যাতায়াতে যাত্রী ও পর্যটকদের পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। রোগী, বয়স্ক নারী-পুরুষ কিংবা ছোট শিশুকে স্পিডবোট বা ট্রলারে চড়তে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হয় লাইনে দাঁড়িয়ে। জেটিতে নেই বসার জায়গা, নেই পাবলিক টয়লেট বা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানোর কোনো ব্যবস্থা। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও পর্যটকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে  করা হচ্ছে আধুনিক জেটিঘাট। 

যেখানে থাকবে যাত্রীদের বসার আসন। থাকছে নামাজের ব্যবস্থা, পাবলিক টয়লেট, রেস্ট রুম, গাড়ি পাকিং ব্যবস্থাসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিয়ে তৈরি হচ্ছে এই মহেশখালী গোরকঘাটা জেটিঘাট।।

এদিকে প্রতিদিন উত্তাল সাগরের চ্যানেল পাড়ি দিয়ে প্রায় ২ লক্ষধিক মানুষ গোরকঘাটা হয়ে কক্সবাজার-মহেশখালী যাতায়াত করে। এই পথে দেশী বিদেশী পর্যটকরা নিয়মিত যাওয়া আসা করছে বর্তমানে। তাদের নিরাপদ যাতায়াতের জন্য মহেশখালী কক্সবাজার নৌ-প্রবেশ পথ গোরকঘাটাতে মহেশখালীবাসির জন্য সমুদ্র পথে পর্যটক বান্ধব জেটি  নির্মাণ শুরু করেছে  স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কক্সবাজার।

মহেশখালীর গোরকঘাটা এলাকায় এই দৃষ্টিনন্দন জেটি তৈরির কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান এলজিইডি কক্সবাজার অফিস। নতুন জেটি নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রথমে রাস্তা, এরপর সেখানে নতুন জেটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। জেটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে। এই জেটি  ৭০০ মিটার দীর্ঘ এবং ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্থ হবে বলে জানেিয়ছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩০০ মিটার সংযোগ সড়কও রয়েছে বলে জানা গেছে । আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জেটির নির্মাণকাজ শেষ করার কথা জানান এলজিইডি কক্সবাজার।

অন্যদিকে মহেশখালী গোরকঘাটা বর্তমান জেটিঘাট স্বাধীনতার কিছু পরে মহেশখালীবাসির জন্য তৈরি করা হলেও এখন তা ভঙ্গুর হওয়ার কারণে যাতায়াত ব্যবস্থা বিপদজনক হয়ে উঠে যার কারণে পাশেই আরেকটি উন্নত ও পর্যটকবান্ধব জেটিঘাট নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে।

বর্তমান জেটির নাজুক অবস্থার কারণে যেকোন মুহুর্তে দুঘটনা ঘটতে পারে এমনটা মনে করছে মহেশখালী থেকে আসা যাওয়া করা স্থানীয়রা। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন জেটির কাজ শেষ করার আহবান জানান সচেতন মহল। পাহাড়, নদী ও সাগর বেষ্টিত নয়নাভিরাম দ্বীপ পুঞ্জ  এই  মহেশখালীবাসির স্বপ্ন পূরণ হওয়ার কারণে ছোট বড় সকলে নিরাপদ যাতায়াত করতে পারবে বলে আশা করছে।

অন্যদিকে এই দ্বীপের তিন দিকে বঙ্গোপসাগর, আরেক দিকে কোহলিয়া নদী। মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন ৩৬২.১৮ বর্গ কি.মি আয়তনের এই দ্বীপের জনসংখ্যা প্রায় চার লক্ষাধিক। 

মহেশখালী পৌরসভা এবং ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই দ্বীপ প্রাকৃতিক সম্পদ, প্রাণী সম্পদ ও জীব বৈচিত্রে সমৃদ্ধ। রাখাইন মন্দির, ঐতিহাসিক আদিনাথ মন্দির, সোনাদিয়ার মনোরম সমুদ্র সৈকত, ম্যানগ্রোভ, লবনের মাঠ, চিংড়ি চাষ, পানের বরজ মহেশখালীর পর্যটন খাতকে যেমন সুন্দর করেছে ঠিক তেমনি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বলে জানান স্থানীয় সচেতন মহল।

মহেশখালীকে বাংলাদেশের একমাত্র স্বীকৃত ডিজিটাল আইল্যান্ড বলা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে গিয়ে পর্যটকদের টান থেকেই যায় মহেশখালীর প্রতি । যার কারণে মহেশখালী যেতে হলে সুন্দর একটি জেটি প্রয়োজন তা বর্তমানে কাজ চলমান রয়েছে এমনটা দেখা গেছে। কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, এল.এন.জি টার্মিনাল, গভীর সমুদ্র বন্দর, টাউনশীপ, সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম জোন হওয়ার কারণে তা দেখতে পর্যটক এখন মহেশখালী ছুটে যান।

স্থানীয় দিদার জানান, বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেষে গড়ে উঠা এই দ্বীপের সাথে মূল ভূখন্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থা কতটুকু বুকিপূর্ণ এবং বিপদ সংকুল হওয়ার কারণে এই জেটি বেশ উপযোগি বলে মনে করছে স্থানীয়রা।

মহেশখালীবাসি এই নতুন  জেটি পাওয়ার কারণে বেশ খুশি মনে তাদের আবেগের কথা তুলে ধরেন। বর্তমান যাতায়াত ব্যবস্থা তুলে ধরে সোহেল নামের একজন জানান, বর্তমানে যে জেটি রয়েছে তা অত্যান্ত ছোট। যাতায়াত করতে  বেশ কষ্ট হচ্ছে মানুষের। বিশেষ করে মহেশখালীতে সরকারের বিশেষ উন্নয়ন কাজ চলার কারণে সাধারণ মানুষ ও পর্যটকের আনাগোনা বেড়েছে । তাই বর্তমানে যে জেটি করছে তা পর্যটক ও স্থানীয়দের জন্য নিরাপদ হবে বলে মনে করছি।

স্থানীয়রা মনে করছে, এই জেটি হলে মহেশখালী আরো বিনিয়োগ বান্ধব হবে। পর্যটকদের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু হবে। মহেশখালী পৌরসভার রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে অনন্য ভূমিকা রাখবে। সর্বোপরি মহেশখালী পৌরসভার ততা মহেশখালীর উপজেলার আপামর জনগোষ্টির নিরাপদ ও দ্রুত যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে।

বাতায়ন বলছে, দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মূল প্রবেশদ্বার  গোরকঘাটা জেটি, আরেকটি আদিনাথ জেটি। গোরকঘাটা জেটিটি ১৯৮৬ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্মান করে এবং পরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ১৯৮৯ সালে গোরকঘাটায় ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় একটি জেটি যার ৬৯৫ মিটার দীর্ঘ এবং ৬ মিটার প্রশস্থ ছিল।। মূলত এই জেটিটি নির্মানের পর হতে জেলা শহর কক্সবাজারের সাথে যোগাযোগ অনেক সহজতর হয়।

কক্সবাজার স্থানীয়  সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের  নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান জানান, মহেশখালীবাসি ও পর্যটনখাত উন্নয়নে এই জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই জেটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে যেমন স্থানীয়রা নিরাপদে জেটি পার হতে পারবে ঠিক তেমনি পর্যটকরাও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে চলাফেরায়। আশা  করা যাচ্ছে শীগ্রই কাজ শেষ করতে পারবো। কাজ শেষ হলেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

এফপি/রাজ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝