ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর (শায়খে চরমোনাই) মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেছেন, ২০২৪ এর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে বৈষম্য দূর হবে এই ভাবনায় আমরা সংগ্রাম করেছিলাম।
রক্ত দিয়েছিল অনেকে, শাহাদাত বরণ করেছে, পঙ্গুত্ব বরণ করেছে অনেকে। ভেবেছিলাম এবার কোন বৈষম্য থাকবে না, কিন্তু এবার কি দেখেছি, আবারো সেই চাঁদাবাজি, সেই জুলুম, সেই অত্যাচার, ডাকাতি, খুন-ধর্ষণ, আবারো নির্বিচারে মানুষ হত্যা এটাতো আমরা চাই না। এজন্য মানুষ কি আন্দোলন করেছিল, জীবন দিয়েছিল। আমরা রক্ত দিচ্ছি, আন্দোলন-সংগ্রাম করার পরও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হচ্ছেনা কেন। এটা কেউ চিন্তা করেছে। কিয়ামত পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রাম করলেও বৈষম্য, চাঁদাবাজি, জুলুম বন্ধ হবে না। এর কারণ কি?
শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে কুলাউড়া ডাকবাংলো মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুলাউড়া উপজেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত গণ সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
তিনি আরো বলেন, বিগত সময়ে অনেককে নমিনেশন দাখিল করতে দেয়া হয়নি, এই কাজ কিন্তু আওয়ামী লীগ করেছে, শেখ সাহেবও করেছিল। অনেককে নমিনেশন জমা দিতে দেয়নি, অনেককে ভোট কেন্দ্রে যেতে দেয়নি, ব্যালট চুরি, ভোট চুরি, বাক্স ছিনতাই এসব আওয়ামী লীগের পুরনো অভ্যাস।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর ফয়জুল করিম আরো বলেন, ৭১ এ আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম, ভেবেছিলাম দুর্নীতি-বৈষম্য দূর হবে, জীবন থাকবে না, অত্যাচার থাকবে না, অবিচার থাকবে না, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেই কিন্তু ৭১ এ আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম। বৈষম্য দূর করার জন্য আন্দোলন করলাম। ৭১ এর পরে আমরা আবার কি দেখলাম, আবারো বৈষম্য, জুলুম, চাঁদাবাজি, অত্যাচার বেড়েছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুলাউড়া উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা আব্দুল মুক্তাদির ঢেউপাশী, মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, সহ-সভাপতি মাওলানা সোলাইমান আহমদ, কুলাউড়া ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, কথিত নারী সংস্কার বিষয়ক কমিশন বাতিল, ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে সংঘঠিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার, অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ভারতে ওয়াকফ আইন সংস্কারের নামে মুসলিম নির্মূলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ এবং ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামী সমাজভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে এ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এফপি/রাজ