বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রমনা বটমূল, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, জাতীয় সংসদ ভবন, হাতিরঝিল ও রবীন্দ্র সরোবরসহ বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয়েছে ১৮ হাজার পুলিশ সদস্য। এছাড়া, র্যাব, সোয়াট, সিটিটিসি, গোয়েন্দা সংস্থা এবং সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রতিটি অনুষ্ঠানস্থলে স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার এবং ড্রোনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মনিটরিং ব্যবস্থা। সন্দেহভাজন কাউকে শনাক্ত হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানস্থলগুলোতে ডগ স্কোয়াড ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের মাধ্যমে সুইপিং সম্পন্ন হয়েছে। প্রবেশপথে আর্চওয়ে ও হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রমনা পার্ক এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। কিছু এলাকায় ডাইভারশন দেওয়া হয়েছে, যাতে যানজট এড়ানো যায়। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার রোধে সাইবার পেট্রোলিং চালানো হচ্ছে। অপপ্রচার চালালে আইনের আওতায় আনা হবে।
রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার’, মেডিকেল সেন্টার, রক্তদান কেন্দ্র এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পর্যটকদের সহায়তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং লেকে নৌপুলিশের টিমও প্রস্তুত রয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট হামলার শঙ্কা নেই। তবে অতীতের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, সন্ধ্যা ৫টার পর রমনা পার্কে প্রবেশ নিষিদ্ধ এবং অনুষ্ঠানস্থলগুলোতে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সারাদেশে মোট ২,৪৪৯ জন সদস্য মোতায়েন করেছে। এদের মধ্যে ৪১৩ জন সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারিতে নিয়োজিত। র্যাবের স্পেশাল ফোর্স কমান্ডো টিম সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে, যাতে কোনো নাশকতা বা হামলা মোকাবিলা করা যায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে ১৩ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে- ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো, ফানুস ও আতশবাজি নিষিদ্ধ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অনুষ্ঠানস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
সার্বিকভাবে, পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় নেওয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জনসাধারণকে উৎসবমুখর পরিবেশে নিরাপদে নববর্ষ উদযাপনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এফপি/রাজ