২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যার পর তাদের মরদেহ পুলিশ ভ্যানে রেখে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আদালতের আদেশে যাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে, তারা হলেন: মো. আব্দুল্লাহিল কাফী – ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস)। মো. শাহিদুল ইসলাম – ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল)। মো. আরাফাত হোসেন – সাবেক ডিবি পরিদর্শক।
এছাড়া, কনস্টেবল মুকুল চোকদার ও এসআই মালেককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মুকুল চোকদারকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যার পর তাদের মরদেহ একটি রিকশায় চ্যাংদোলা করে তোলা হয়। পরে পুলিশের একটি ভ্যানে করে মরদেহগুলো থানার কাছে একটি দোকানের সামনে এনে পেট্রল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার উদ্দেশ্য ছিল হত্যাকাণ্ডের দায় ছাত্র-জনতার ওপর চাপিয়ে দেওয়া।
ঘটনার সঙ্গে তৎকালীন ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, তিনি নিজ হাতে অস্ত্র নিয়ে গুলি করেছেন। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, এই নৃশংসতার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের একজন কনস্টেবল মুকুল চোকদার। তদন্তে দেখা গেছে, ঘটনার সময় একজন নিহত হননি; তিনি জীবিত ছিলেন এবং জীবিত অবস্থায় তাঁর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়।
প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “আমরা যদি অপরাধগুলো প্রমাণ করতে চাই, কীভাবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে, সে জন্য গ্রাউন্ড লেভেলে (মাঠপর্যায়ে) নিষ্ঠুরতম কাজ যাঁরা করেছেন, তাঁদের কয়েকজনকে আমরা ধরেছি।” এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এফপি/রাজ