প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি খাতের টেকসই উন্নয়নে দুধের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণে একটি জাতীয় নীতি প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, “খামারিরা অত্যন্ত পরিশ্রম করে গরু পালন করছেন। অথচ একদিকে ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না, অন্যদিকে গবাদিপশুর খাদ্যের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব সমস্যার টেকসই সমাধানে ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ এবং খরচ কমানোর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।”
আজ শনিবার (০৫ জুলাই) বিকেলে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া গ্রামে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)-এর পোতাজিয়া ডেইরি পিজিতে ক্ষুদ্র খামারি সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দুধ উৎপাদনে সিরাজগঞ্জ জেলার অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করে উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের একক জেলা হিসেবে সিরাজগঞ্জে যে পরিমাণ দুধ উৎপাদন হচ্ছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এ জেলার খামারিদের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে।” তিনি জানান, সিরাজগঞ্জে দুধ সংগ্রহকেন্দ্র (চিলিং সেন্টার) স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে, যাতে এই অঞ্চলের খামারিরা সহজে দুধ সংরক্ষণ ও বিপণনের সুবিধা পান।
খাদ্য ব্যয়ের চাপ কমাতে গবাদিপশুর জন্য ঘাসভিত্তিক খাদ্য ব্যবহারে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ঘাসের চাষ বাড়ালে খামারিদের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব হবে। গরুর খুরা রোগ প্রতিরোধে দেশের চারটি জেলার মতো সিরাজগঞ্জেও ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম চালু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ উদ্যোগের ফলে খামারিরা খুরা রোগজনিত ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবেন এবং উৎপাদন আরও বাড়বে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, পরিচালক বেগম শামসুন্নাহার আহমদ, এলডিডিপি প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন।
খামারিদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মো. আব্দুল খালেক ফকির, মো. আব্দুল মতিন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জাকারিয়া জিহাদ ও ফারজানা মিমি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ. কে. এম আনোয়ারুল হক। সভায় প্রাণিসম্পদ খামারিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে উপদেষ্টা পাবনা জেলার প্রাণিসম্পদ বিভাগের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, পরিচালক বেগম শামসুন্নাহার আহমদ, রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক ডা. আনন্দ কুমার অধিকারী, পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ.কে.এস.এম মুশাররফ হোসেন, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ডা. কৃষ্ণমোহন হালদারসহ বিভিন্ন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাবৃন্দ।
আজ সন্ধ্যায় উপদেষ্টা বাঘাবাড়ি ঘাট দুগ্ধ কারখানা পরিদর্শন করেন। এসময় বাঘাবাড়ি ঘাট দুগ্ধ কারখানার উপ-মহাব্যবস্হাপক (কারখানা) ডা. সাইদুল ইসলাম, উপ-মহাব্যবস্হাপক ( সমিতি) অমীয় কুমার মণ্ডলসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা- কর্মচারিরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও উপদেষ্টা সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুরে বেঙ্গল মিটের লাল মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, কসাইখানা, মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা ও জৈব গ্যাস প্লান্ট পরিদর্শন করেন।
এফপি/এমআই