পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসেনি দালান থেকে আজ সকালে শুরু হয়েছে ঐতিহাসিক তাজিয়া মিছিল। ৪০০ বছরের পুরোনো এই শোকমিছিল ঘিরে হাজারো মানুষ ঢল নেমেছে নাজিমুদ্দিন রোড এলাকায়। ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে মিছিলটি বেলা ২টা ৩০ মিনিটে ধানমন্ডি লেকে গিয়ে শেষ হয়।
সকাল ১০টায় হোসেনি দালান ইমামবাড়ার উত্তর গেট থেকে তাজিয়া মিছিল শুরু হয়। এতে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ ও শিশু কালো পোশাক পরে অংশ নেন। তাদের হাতে ছিল কারবালার স্মৃতি বহনকারী তাজিয়া, আলম, ঝুলা, বেহেস্তা নিশান, পাঞ্জা আলম, এবং প্রতীকী দুলদুল ঘোড়া। মিছিলের অগ্রভাগে ছিল দুইটি সাদা ঘোড়া, যেগুলো হযরত ইমাম হোসেন (রা.)-এর বাহন দুলদুলের প্রতীক।
মিছিলটি হোসেনি দালান থেকে শুরু হয়ে বকশীবাজার, আলিয়া মাদ্রাসা রোড, কলপাড়া মোড়, আজিমপুর, নীলক্ষেত হয়ে ধানমন্ডি ২ নম্বর রোড, বিজিবি গেট ও সাত মসজিদ রোড ঘুরে ধানমন্ডি লেকের অস্থায়ী কারবালায় গিয়ে শেষ হয়। এতে অংশ নেওয়া ভক্তরা বলেন, ইমাম হোসেন (রা.)-এর আত্মত্যাগ মানবতার বার্তা বহন করে। তারা ইতিহাসের সেই মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর কখনও না ঘটে, সে প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন।
তাজিয়া মিছিল ঘিরে নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়, মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র, ছুরি, তরোয়াল, দাহ্য পদার্থ বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ইমামবাড়ার আশপাশে ও মিছিলের রুটজুড়ে মোতায়েন ছিল অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা। প্রবেশপথগুলোতে ছিল আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর। নিরাপত্তায় অংশ নেয় ফায়ার সার্ভিস ও স্বাস্থ্যসেবা দলও।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ রুট দিয়ে যাওয়া মিছিলের কারণে কিছু এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং বিকল্প রুট ব্যবহারের পরামর্শ দেয় পুলিশ।
হোসেনি দালানের সুপারিনটেনডেন্ট এম এম ফিরোজ হোসেন বলেন, “বছরের পর বছর ধরে আমরা এই তাজিয়া মিছিল শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে আসছি। এবারও যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য আমরা সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।”
এফপি/রাজ