গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন অবস্থায় হঠাৎ পায়ের ডিম বা কাফ মাসলে তীব্র যন্ত্রণায় ঘুম ভেঙে যাওয়া—এই অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে। তখন পা সোজা বা ভাঁজ, কিছুই করা যায় না। মনে হয় শিরা বা রগ এক জায়গায় দলা পাকিয়ে গেছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এ সমস্যাকে বলা হয় নকচারনাল লেগ ক্র্যাম্পস।
শিশু থেকে বৃদ্ধ—প্রায় সব বয়সের মানুষই কমবেশি এই সমস্যায় ভোগেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। জীবনযাত্রায় সামান্য পরিবর্তন ও কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় মেনে চললেই এই যন্ত্রণা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
কেন হয় এই সমস্যা?
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে পানির ঘাটতি (ডিহাইড্রেশন) অন্যতম প্রধান কারণ।
এ ছাড়া ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের অভাব, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করা, অতিরিক্ত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম, গর্ভাবস্থা ও বার্ধক্য; এসব কারণে পেশিতে হঠাৎ টান ধরতে পারে।
ঘুমের মধ্যে পায়ে টান ধরলে ভয় না পেয়ে নিচের উপায়গুলো অনুসরণ করুন—
স্ট্রেচিং: আক্রান্ত পা সোজা করে পায়ের পাতাটি নিজের দিকে টানুন। হাত দিয়ে আঙুল ধরে টানলে কাফ মাসল প্রসারিত হয় এবং ব্যথা কমে।
হাঁটাচলা: বিছানা থেকে নেমে ধীরে ধীরে কিছুক্ষণ হাঁটুন।এতে পেশি শিথিল হয়।
গরম সেঁক: টান ধরা জায়গায় হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে সেঁক দিন বা গরম পানিতে গোসল করুন।
ম্যাসাজ: অল্প তেল দিয়ে হালকা হাতে মালিশ করলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং আরাম মেলে।এই সমস্যা যেন বারবার না হয়, সেজন্য কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি—
পর্যাপ্ত পানি পান: দিনে অন্তত ৩–৪ লিটার পানি পান করুন।
পুষ্টিকর খাবার: কলা, ডাবের পানি, পালং শাক, বাদামসহ পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খান।
ঘুমানোর ভঙ্গি: উপুড় হয়ে না ঘুমিয়ে চিত হয়ে বা কাত হয়ে ঘুমান।
হালকা ব্যায়াম: ঘুমানোর আগে পায়ের হালকা স্ট্রেচিং বা কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি উপকারী।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?
সাধারণত ঘরোয়া উপায়েই নকচারনাল লেগ ক্র্যাম্পস নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে যদি প্রায়ই পায়ে টান ধরে, পা ফুলে যায়, ব্যথা খুব বেশি বা দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এটি কখনো কখনো ডায়াবেটিস বা স্নায়ুর সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।
এফপি/অ