খুলনায় পৌনে ৬ লাখ টাকার জন্য মাকে হত্যা করেছে তারই ছেলে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে নগরীর ট্যাংক রোড রবিউল ইসলামের বাড়ির নীচ তলা থেকে গৃহবধু শিউলী বেগমের (৪৫) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকে ছেলে রিয়াদ পলাতক রয়েছে।
গৃহবধু শিউলী বেগম হত্যা কান্ডের সন্দেহের তীর ছেলে রিয়াদের দিকে। ১৫ ঘন্টার অধিক সময় অতিবাহিত হলেও নিহতের ছেলের সন্ধান মেলাতে পারেনি পুলিশ। রাতে সুরাতহাল রিপোর্ট করতে মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, বুধবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে নগরীর ট্যাংক রোড রবিউল ইসলামের বাড়ির নীচ তলা থেকে গৃহবধু শিউলী বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার আগে ঘর থেকে প্রায় পৌনে ৬ লাখ টাকা হারিয়ে যায়। হত্যাকান্ডের পর থেকে তার একমাত্র ছেলেও লাপাত্তা রয়েছে।
জানতে চাইলে খুলনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, শিউলী বেগমের ঘরে রাখা প্রায় পৌনে ৬ লাখ টাকার সন্ধান মেলাতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় ছেলে রিয়াদকে পরিবারের পক্ষ থেকে সন্দেহ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ঘরে রাখা পুতো দিয়ে মাথার তালুর বাম পাশে আঘাত এবং পরবর্তীতে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বালিশ দিয়ে চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।
নিহত শিউলী বেগমের মেয়ে কেয়া জানায়, আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে দুই বছর আগে পরিবার ছেড়ে সৌদি পাড়ি জমান শিউলী বেগম। সেখানকার সমস্ত অর্জিত টাকাগুলো তিনি ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে নিয়ে আসেন। দেশে ফিরে প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ৫-৬ দিন পূর্বে প্রায় পৌনে ৬ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে তুলে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
কেয়া আরো বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু বুধবার সকাল থেকে তার মায়ের সন্ধান পাননি। মায়ের খোঁজে ডুমুরিয়ায় নানা বাড়িতে চলে যায় কিন্তু সেখানে না পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসে পুনরায় মায়ের সন্ধান করতে থাকে। এক সময় মায়ের পায়ের স্যান্ডেল ঘরের সামনে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করতে থাকে। এক পর্যায়ে বাড়ির মালিক ও মায়ের ঘরের পাশে থাকা পুলিশের উপস্থিতি তালা কেটে মায়ের মৃত দেহ খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।
কেয়া আরও বলেন, আমার ভাই রিয়াদ পেশায় একজন টাইলসের মিস্ত্রি ছিল। প্রতিদিন ভোর ৬ টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু বুধবার সকাল ৭- ৫৫ মিনিটের দিকে সে বের হয়। এ সময় তার কাছে একটি ব্যাগ এবং কালো রংয়ের একটি শার্ট পরা ছিল। যেটি বাড়ির মালিকের সিসি ফুটেজে ধরা পড়েছে। তার আচারণ সন্দেহ জনক। তাছাড়া ব্যাংক থেকে আনা পৌনে ৬ লাখ টাকা এবং ঘরের সবকিছু এলোমেলো ছিল। ভাই রিয়াদ ঘরের বাইরে থেকে বের হওয়ার পর ওই ঘরে আর কেউ প্রবেশ বা বের হয়নি। তাই ছোট ভাই রিয়াদই মাকে খুন করেছে।
কেএমপি'র উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সুদর্শন কুমার রায় বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে রিয়াদকে দোষারোপ করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই আমরা তাকে পেয়ে যাব এবং ঘটনার বিস্তারিত জানানো হবে।
এফপি/জেএস