শিশুদের অনলাইন যৌন শোষণ ও নির্যাতন (OSEA) প্রতিরোধে সেবা সমন্বয় ও সুরক্ষা কাঠামো আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বাগেরহাটে সেবা মানচিত্র হালনাগাদ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ইউরোপীয় ইউনিয়ন–এর সহায়তায় EU–Speak Up Project এর আওতায় ইনসিডিন বাংলাদেশের উদ্যোগে উদয়ন বাংলাদেশের বাগেরহাট কার্যালয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় শিশুদের বিদ্যমান সেবা, ঝুঁকি, সম্ভাব্য করণীয় এবং অনলাইন নিরাপত্তা জোরদার করার কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারীরা উল্লেখ করেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের বিস্তারের কারণে অনলাইনে শিশু নির্যাতন ও শোষণের ঝুঁকি উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে—যা মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ, সচেতনতা সৃষ্টি এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।
আয়োজকরা জানান, কর্মশালার মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে শিশু সুরক্ষা–বিষয়ক সেবা মানচিত্র হালনাগাদ করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ভূমিকা ও করণীয় আরও স্পষ্ট হবে, যা ভবিষ্যতে জাতীয় নীতিমালায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ইনসিডিন বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে OSEA প্রতিরোধে সচেতনতা, সক্ষমতা উন্নয়ন ও সেবা সমন্বয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
সাংবাদিক ইসরাত জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক সন্তোষ কুমার নাথ বলেন, “শিশু সুরক্ষা আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যু। অনলাইনে অপরাধ প্রতিনিয়ত রূপ বদলাচ্ছে। তাই সময়োপযোগী সেবা মানচিত্র তৈরি হলে কাজ আরও গতিশীল হবে।”
বিশেষ অতিথি জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা শেখ আসাদুর রহমান বলেন, “শিশুরা যেন নিরাপদে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারে—এটা নিশ্চিত করতে পরিবার, প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি।”
মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের ওসিসি কর্মকর্তা নুসরাত জাহান বলেন, “অনলাইন হয়রানি বা নির্যাতনের শিকার হলে কোথায় সেবা পাওয়া যায়, তা অনেকেই জানেন না। হালনাগাদ সেবা মানচিত্র এ সমস্যার সমাধানে বড় ভূমিকা রাখবে।”
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনসিডিন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম পরিচালক মোঃ রফিকুল আলম।
বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, “শিশু সুরক্ষায় সাংবাদিকতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যমের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
সাবেক সভাপতি বাবুল সরদার বলেন, “অনলাইন প্ল্যাটফর্মে শিশুদের ঝুঁকি কমাতে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আরও সতর্ক হতে হবে।”
সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর টুটুল বলেন, “শিশুরা যেন প্রযুক্তিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে শেখে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।”
প্রেসক্লাব মোল্লাহাটের সাধারণ সম্পাদক এম এম মফিজুর রহমান বলেন, “সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়লে শিশুরা আরও দ্রুত ও কার্যকর সহায়তা পাবে।”
কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিক, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং শিশু সুরক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন।
এফপি/জেএস