Dhaka, Friday | 5 December 2025
         
English Edition
   
Epaper | Friday | 5 December 2025 | English
বাংলাদেশের মেয়েদের পাকিস্তান বধ
ছুটির দিনেও ঢাকার বাতাস ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’
চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত
বায়ুদূষণে ‘প্রথম স্থানে’ ঢাকা
শিরোনাম:

দূষণ আর দখলে অস্তিত্বহীন খরস্রোতা আত্রাই নদী

প্রকাশ: শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬:০০ পিএম  (ভিজিটর : ৩১)
সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

এক সময়ের খরস্রোতা আত্রাই নদী আজ দখলদূষণে হারিয়ে যাচ্ছে মানচিত্র থেকে। স্থানীয় প্রভাবশালী ও ভূমি অফিসের একটি অসাধু অংশের সহায়তায় নদীর তলদেশ ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে বহুতল ভবন, মার্কেট, আধাপাকা দোকান, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ অসংখ্য স্থাপনা।


প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই নদী ভরাটের এই উন্মাদনা আত্রাইকে পরিণত করেছে মৃত জলাশয়ে। যাকে স্থানীয়রা এখন মরাখাল বলেই চিহ্নিত করেন।


পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নে ইছামতির উৎসধারা থেকে জন্ম নেওয়া আত্রাই নদী সাঁথিয়া, বেড়া ও সুজানগর পেরিয়ে মাসুমদিয়া দিয়ে যমুনায় প্রবেশ করেছে। সেই নদীরই বৃহৎ অংশবিশেষত সাঁথিয়া ও কাশিনাথপুর এলাকাজুড়েআজ প্রায় ধ্বংসপ্রায়।


পাবনাঢাকা ও কাজিরহাটবগুড়া মহাসড়কের সংযোগমুখী ব্যস্ত বাণিজ্যকেন্দ্র কাশিনাথপুর বাজার এলাকা এখন নদী দখলের সবচেয়ে ভয়াবহ উদাহরণ। স্থানীয়রা জানান, এখানে অন্তত দেড় কিলোমিটার নদী পুরোপুরি দখল হয়ে গেছে। নদীর বুকের ওপর সেতু থাকলেও দুই পাড়ে নদীর জায়গা ভরাট করে উঠেছে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন, আবাসিক স্থাপনা ও প্রায় ৪০৪৫টি দোকান। এখনো থেমে নেই নির্মাণকাজ।


অন্যদিকে, যেখানে স্রোত বইতো, সেই স্থানে আজ জমেছে হাটবাজারের নোংরা পানি, আবর্জনা, পলিথিনপরিণত হয়েছে বড়সড় বর্জ্য ভাগাড়ে।


স্থানীয়দের ভাষ্য, আত্রাই নদী দখলের সূচনা হয় ২০০০ সালের পর। সুজানগরের আহাম্মদপুর ইউনিয়নে সরকারি অর্থে নতুন সেতু ও সড়ক নির্মাণের পরপরই নদীর দুই পাশ দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। রাজনৈতিক অভিভাবকত্বে শক্তিশালী ব্যবসায়ী মহল নদীর পাড় দখল করে ভবন নির্মাণ করে এখন সেগুলো ভাড়া দিয়ে মোটা অঙ্কের আয় করছে।


এক সময় বাঘুলপুর, বাদাই, ভাটিকয়া, সাগতা, রানীনগর, আমিনপুরসহ বহু এলাকার মানুষের যাতায়াত, পণ্য পরিবহনের প্রধান সড়ক ছিল এই আত্রাই। পালতোলা নৌকা, লঞ্চ ও ছোট ট্রলার সারিবদ্ধভাবে চলাচল করত। সেই নদী আজ অস্তিত্ব সংকটে।


এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলা প্রশাসনের তেমন কোনো নজরদারি বা উচ্ছেদ অভিযানের নজির নেই। ফলে দখলদাররা আরও বেপরোয়া হয়েছেসাংবাদিকরাও মাঝে মধ্যেই এসব তুলে ধরে পত্রিকায়, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও মাঝে মাঝে বৃথা চেষ্টা পরিস্ককার করার তার পরেও কোন সমাধান হয়না


বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হুমায়ুন কবির বলেন,একসময় আত্রাই নদীতে নৌকা, লঞ্চ, মাছের সমারোহ ছিল। নদী রক্ষায় আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই। প্রভাবশালীরা নদীর বুক দখল করে বহুতল ভবন তৈরি করেছে, কোথাও আবার ফসল চাষ করছেএ যেন নদী ধ্বংসের প্রকাশ্য উৎসব


অভিযোগ অস্বীকার করে কয়েকজন ভবনমালিক জানান, তারা বৈধভাবে কেনা জমিতে ভবন নির্মাণ করেছেন এবং তাদের নথিপত্র ঠিক আছে। তবে নদী ভরাট করে এসব দলিল কীভাবে তৈরি হলোসেই প্রশ্ন প্রশাসন বা ভূমি দপ্তর কেউই স্পষ্টভাবে বলতে পারে না।


সাঁথিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসিফ রায়হান বলেন,নদীর বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন। তারা সহযোগিতা চাইলে আমরা ব্যবস্থা নেবো


পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলমের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি। কাশিনাথপুর উপ- বিভাগের উপ- সহকারী প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন জানান,এসও স্যারের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে


এলাকাবাসীর দাবিআত্রাইকে বাঁচানস্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, নদী উদ্ধার, সঠিক ডিমান্ড সার্ভে করে নদীর সীমানা নির্ধারণ ও পানি প্রবাহ পুনঃস্থাপন করতে হবে। তারা বলেনআর দেরি হলে আত্রাই নামক নদীটি শুধু ইতিহাসের পাতায়ই গাঁথা থাকবে


এফপি/জেএস

সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝