বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। জুনিয়র ক্রিকেটারদের শারীরিক-মানসিক নির্যাতন থেকে শুরু করে সিনিয়র ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ারে হস্তক্ষেপ করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি ড্রেসিংরুমে জ্যোতির স্বৈরাচারী মনোভাবে অতিষ্ঠ ক্রিকেটাররা, এমনটাও বলা হচ্ছে।
তবে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন জ্যোতি। অধিনায়ক হিসেবে আলাদা সম্মান পান, কিন্তু স্বৈরাচার নন বলে দাবি করেছেন তিনি। ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টাইগ্রেস অধিনায়ক বলেন, ‘আমি কোনোভাবেই স্বৈরাচার নই। ড্রেসিংরুমে প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জায়গা আছে, আমারও আছে। হ্যাঁ, অধিনায়ক হিসেবে আমি হয়তো অন্যভাবে সম্মান পাই। কিন্তু সুযোগ-সুবিধা ও আচরণ সবার জন্য সমান। আমি জানি না কারা এসব বলছে, কেন বলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসবের পেছনে কে, তা এখন পরিষ্কার। দেখুন, আমি অনেকদিন ধরে অধিনায়ক। সবাই আমাকে পছন্দ করবে সেই আশা করি না। কিন্তু দলের জন্য আমি কী করছি এবং আমার সত্যিকারের অভিপ্রায় কী, সেটা আমি জানি।’
দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার জাহানারা আলম ও রুমানা আহমেদের বাদ পড়ার পেছনে জ্যোতির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে নারী দলের অধিনায়ক বলেন, ‘অনেক দিন ধরে এমন কথা শুনছি যে, আমি তাদের সরিয়ে দিয়েছি। কারণ তারা ভালো পারফর্ম করে অধিনায়কত্ব পাওয়ার দৌড়ে ছিল। আর হ্যাঁ, সিন্ডিকেট কী? ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় দলের সঙ্গে খেলছি, সিনিয়রদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করছি। এমন কিছু আমি কখনো দেখিনি। ড্রেসিংরুমে সবাই আপনার কাছের বন্ধু হবে না। ১১ জন খেলোয়াড়ের সঙ্গে ১১ ধরনের ভিন্ন সম্পর্ক। এটাই স্বাভাবিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা যদি বলে সিন্ডিকেট করে আমি তাদের সরিয়ে দিয়েছি, কাউকে সরিয়ে দেওয়ার আমি কে? আমি কি নির্বাচক? ২০২১ সালে আমি অধিনায়ক হলেও ২০২৩ সালে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগ পর্যন্ত আমি নির্বাচক প্যানেলে ছিলাম না। এর আগে নির্বাচনের ব্যাপারে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। ১১ জনের মধ্যে কে থাকছে সেটা না জেনেই খেলোয়াড়রা টিম মিটিংয়ে যেতো, আমিও জানতাম না। ১৫ কিংবা ১৮ জনের স্কোয়াডের ব্যাপারে আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা হতো না। বোর্ডের সঙ্গে আলাপ করে এটা যাচাই করতে পারেন।’
জুনিয়রদের গালাগালি ও শারীরিক নির্যাতন প্রসঙ্গে জ্যোতি বলেন, ‘এটা মিথ্যা অভিযোগ। শুধু একজন এই কথা বলেছে, একাধিক জুনিয়র নয়। ওই সময়ের উত্তেজনায় আমি হয়তো বলতে পারি, ‘বল উঠাচ্ছো না কেন?’ ‘আরও ভালো করতে পারতে’, ‘স্টাম্প বরাবর বল কর’। এসব তো সবাই বলে। আমার কথা বেশি শোনা যেতো কারণ মাউথপিস আমার কাছে। আমি রেগে যেতাম কারণ আমার সেরা ফিল্ডারদের কাছ থেকে আরও বেশি চাইতাম। কিন্তু কেন আমি গালি দেবো? আমি মানসিকভাবে অসুস্থ? আমি এমন পরিবার থেকে আসিনি। কাউকে গালি দেওয়ার অধিকার আমার নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি শুনলাম জাহানারা আপু অভিযোগ করেছেন, কেউ অস্ট্রেলিয়ায় তাকে কল করে বলেছে, ‘আমাদের বাঁচান, জ্যোতি আপু আমাদের মারছে।’ আমি যদি কাউকে মারতাম, সেখানে কি টিম ম্যানেজমেন্ট ছিল না? কোচেরা? কেন টিম ম্যানেজমেন্টকে না বলে কেউ একজন অস্ট্রেলিয়াতে ফোন দিয়ে জানাল। এসবের কি কোনো মানে আছে?’
এফপি/এমআই