| শিরোনাম: |

পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের আশায় বিয়ানীবাজারে প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়ছে। বার্ষিক পরীক্ষা এগিয়ে আসায় প্রাইভেট নির্ভরতা আরোও বেড়েছে। শিক্ষকদের কেউ বাড়ি গিয়ে আবার শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের নির্ধারিত স্থানে গিয়ে পাঠ গ্রহণের কাজ সারছে। স্থানীয়ভাবে প্রাইভেট নির্ভরতা এখন প্রতিটি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। এর বাইরেও অনেক শিক্ষার্থী আবার কোচিং সেন্টারে গিয়েও পড়াশোনা করছে।
সূত্র জানায়, বিয়ানীবাজার পৌরশহরসহ উপজেলার প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রীক এলাকার পরিসংখ্যানে শতাধিক কোচিং সেন্টার রয়েছে। এসব সেন্টারে নিয়মিত প্রথম শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা পড়তে যায়। আর প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে শ্রেণি ও বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি শিক্ষার্থীর পেছনে অভিভাবকদের ব্যয় হয় গড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। বিয়ানীবাজার পৌরশহর এলাকার কোচিং সেন্টারগুলোতে শিক্ষকদের কাছে কোচিং অথবা প্রাইভেট পড়তে আসে প্রতিদিন অন্তত ৩ হাজার শিক্ষার্থী।
একজন অভিভাবকের সাথে কথা বলছিলাম। তিনি একজন সরকারি কর্মচারী। নাম প্রকাশ করতে চাইলেন না। তাঁর এক মেয়ে সপ্তম শ্রেণীতে এবং এক ছেলে উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র। দুই জনই কোচিং সেন্টারে যান। “চাকুরীর কারণে বাচ্চাদের বাসায় সময় দিতে পারি না। যদি সময় দিতে পারতাম তাহলে তাদের কোচিং সেন্টারে যাবার প্রয়োজন হতো না।”
এমন অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, শিক্ষার্থীরা কি বাধ্য হয়েই প্রাইভেট শিক্ষক অথবা কোচিং সেন্টারে যাচ্ছে? বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় কী এমন ঘটেছে যে অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রাইভেট-কোচিং ছাড়া ভাবতেই পারছেন না? প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষাবিদ আলী আহমদ জানান, কোচিং এর চাহিদা তৈরি হয়েছে, সেটির বড় কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন অনেকটাই পরীক্ষা এবং নম্বর কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। ফলে এর পেছনে ছুটছে সবাই।
অবশ্য শিক্ষকরা বলছেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কোচিং-মুখী হবার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের মানসিকতাও কম দায়ী নয়। বিশেষ করে যারা প্রাথমিক পর্যায়ে পড়াশুনো করছে তাদেরও কোচিং সেন্টারের দিকে ঠেলে দেবার পেছনে অভিভাবকদের প্রতিযোগিতাকেই দায়ী করেন তারা। তাদের দাবী, আগের চেয়ে পাঠ্যক্রম আরো সহজ হয়েছে। একজন শিক্ষার্থী যাতে বিষয়গুলো পড়ে বুঝতে পারে, সেভাবেই তৈরি করা হয়েছে পাঠ্যক্রম। বিয়ানীবাজার আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান বলেন, কখনো-কখনো শিক্ষকরা কোচিং এ যেতে বাধ্য করেন, এ কথা যেমন সত্য তেমনি অনেক সময় শিক্ষার্থীরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে কোচিং এ যায়। অভিভাবকরাও হুজুগের বশে আছেন। এ বিষয়টি এখন প্রতিযোগিতামূলক হয়ে গেছে।
বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি সজীব ভট্রাচার্য জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সঠিকভাবে পাঠদান নিশ্চিত করা হচ্ছেনা বলেই শিক্ষার্থীদের কোচিং সেন্টার বা প্রাইভেট টিউটরের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে । পরীক্ষায় ফেল করার আশঙ্কার পাশাপাশি ভালো নাম্বার পেতে শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়ে।
এফপি/অ