শিরোনাম: |
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে বহু প্রতীক্ষিত শিশু পার্ক নির্মাণ প্রকল্পে নতুন করে জটিলতা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবিতে অনুমোদিত এই প্রকল্প এখন অবৈধ দখল ও আদালতে দায়ের করা রীট পিটিশনের কারণে থমকে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
জানাযায়, ২০১৭ সালে অনুমোদন পাওয়া এই শিশু পার্ক প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয় ২০২২ সালে। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির পর জেলা প্রশাসকের বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে ২০২৫ সালে পরবর্তী কাজ শুরু হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রভাবশালী একটি মহল পার্কের নির্ধারিত সরকারি জমি দখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তথ্য অনুযায়ী, পার্ক নির্মাণের জন্য নির্ধারিত জমিটি অর্পিত সম্পত্তির আওতায় পড়ে, যা সরকারি রেকর্ডে হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত। ১৯৭৫ সালে আক্কাছ মাঝি নামের এক ব্যক্তি ওই জমির একটি অংশ লিজ নেন। পরবর্তীতে তার উত্তরসূরি আওলাদ মাঝি জমিটি দখলে রেখে ব্যবসায়িকভাবে সাবলিজ দেন।
যদিও সরকারি রেকর্ডে জমিটি “ডোবা” শ্রেণির ও কৃষি খাজনার আওতায়, সেখানে এখন আটটি দোকান নির্মাণ করে প্রতি বছর প্রায় ৫ লাখ টাকার খাজনা বকেয়া রেখেছেন বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি আওলাদ মাঝি হাইকোর্টে রীট (নং ১৬৬৯৩/২০২৫) দায়ের করেছেন, যাতে তাকে লিজকৃত ০.৪৯ একর জমি থেকে উচ্ছেদ না করার নির্দেশ চাওয়া হয়েছে। তবে তদন্তে দেখা গেছে, তিনি লিজের বাইরে আরও ০.৪৪ একর জমি অবৈধভাবে দখলে রেখেছেন এবং অনুমতি ছাড়া দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা আওলাদ মাঝির সাথে বিএনপির একটি গ্রুপ আড়ালে কাজ করছে। তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এই অবৈধ দখলকে রক্ষা করার পায়তারা করছেন। অথচ সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী জমির মালিকানা উপজেলা পরিষদের নামে নিবন্ধিত এবং পার্কের জন্য যথাযথভাবে বরাদ্দকৃত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুন্সীগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক মো.জাহিদ হাসান জানান, টঙ্গীবাড়ীতে সুস্থ বিনোদনের জন্য একটি পার্ক দরকার। যেখানে বাচ্চারা খেলাধুলা করবে মানসিক বিকাশ ঘটবে। বয়োজ্যেষ্ঠরা হাটাচলা করবে শারীরিক সুস্থ থাকবে। মানসিক বিকাশের জন্য হলেও পার্কটি উদ্ধার করা প্রয়োজন।
টঙ্গীবাড়ী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মারুফ ইসলাম সেন্টু বলেন, এই পার্কটি নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রশাসন কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। তারা যেনো একটা মহৎ উদ্যোগ নিয়ে আমাদের টঙ্গীবাড়ী বাসীর জন্য এমন একটি সুন্দর কাজ সম্পূর্ণ করতে পারে সেটাই আমাদের প্রানের দাবী।
দখলের বিষয়ে আওলাদ মাঝির ছেলে তানজিদ মাঝি বলেন,শিশু পার্ক সংলগ্ন আমাদের বসত বাড়ি। যেটা ৮০ বছর যাবত আমার বাবা দাদা থাকতেছে। আমরা জায়গা নিয়ে কোর্টে রীট করি তারপরও প্রশাসন আমাদের জায়গা ভেঙে দেয়।
এ বিষয়ে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মোস্তাফিজুর রহমান জানান, টঙ্গীবাড়ী শিশু পার্কের কাজ ২০২২ সাল থেকে শুরু হয়েছে। কাজ চলমান আছে। ইতিমধ্যে ফিফটি পারসেন্ট কাজ সমাপ্ত করেছি আর ফিফটি পারসেন্ট কাজ অচিরেই সমাপ্ত করে ফেলবো। তিনি আরো জানান, কাজটা যাতে না হয় এজন্য স্থানীয় কিছু মানুষ বাধা প্রদান করছেন। আমরা অনুরোধ করবো যাতে উনারা আমাদের সহযোগীতা করেন।
এফপি/অআ