বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে আজ ১০৪ জন উপজেলা প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষিকাকে সার্কেল অ্যাডজুট্যান্ট পদে পদোন্নতি প্রদান উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘র্যাংক ব্যাজ’ পরিধান করানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ।
তিনি নবপদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “রাষ্ট্রীয় সেবায় নিয়োজিত প্রত্যেকের মনে থাকতে হবে— আমাদের পারিশ্রমিক আসে জনগণের ঘামার্জিত অর্থ থেকে, তাই দায়িত্ব পালনের প্রতিটি মুহূর্তে সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমকেই সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে। নিজের মাতৃভূমিকে সমুন্নত রাখা— এই হোক আমাদের সবার অঙ্গীকার।”
মহাপরিচালক তাঁর দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে রাষ্ট্রের প্রতি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়বদ্ধতা, মাঠ প্রশাসনে বাহিনীর কার্যকারিতা, দুর্যোগকালীন সময়ে বাহিনীর সদস্যদের আত্মনিবেদন এবং রাষ্ট্রের সার্বিক কল্যাণে গণপ্রতিরক্ষা বাহিনী হিসেবে আনসার বাহিনীর অবদান তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আনসার বাহিনীর অবদান আজ জাতির কাছে অনন্য মর্যাদা অর্জন করেছে। দেশের মাটির প্রতি ভালোবাসা ও মানুষের কল্যাণে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নিবেদিত করতে হলে জানতে হবে— আমরা অতীতে কোথায় ছিলাম, বর্তমানে কোথায় আছি এবং ভবিষ্যতে কোন পথে এগোতে চাই। এই আত্মচেতনা ও দিকনির্ধারণই বাহিনীর অগ্রযাত্রার প্রেরণা ও আলোকবর্তিকা হবে।”
মাঠ পর্যায়ে বাহিনীর প্রতিনিধিত্বমূলক ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “বাহিনীর কাঠামোকে আরও কার্যকর, গতিশীল ও শক্তিশালী রূপে গড়ে তুলতে হলে মাঠ পর্যায়ের প্রতিটি সদস্যকে নিজের যোগ্যতা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটাতে হবে, তবেই বাহিনীর গ্রহণযোগ্যতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে এবং দেশসেবার মহান দায়িত্ব হবে আরও সুসংহত ও ফলপ্রসূ।”
দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের সময়ে আনসার বাহিনীর তাৎক্ষণিক সাড়া প্রদানের সক্ষমতার বিষয়ে তিনি বলেন, “যেকোনো দুর্যোগ বা বিপর্যয়ের মুহূর্তে প্রথম সাড়া দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের।এজন্য প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ববোধে পরিপূর্ণ এবং ইতিবাচক মনোভাবে উদ্ভাসিত থাকতে হবে।”
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের প্রসঙ্গে মহাপরিচালক বলেন, “রাষ্ট্রীয় জানমাল রক্ষায় আনসার সদস্যদের সাহসিকতা সত্যিই অসামান্য। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের সংকটে ঝাঁপিয়ে পড়ার অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন।”
ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনায় তিনি আরও বলেন, “নতুন বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী গণপ্রতিরক্ষা বাহিনী হিসেবে আনসার ও ভিডিপির ভূমিকা হবে আরও জোরালো। রাষ্ট্রের স্বার্থের সাথে সংগতি রেখে নিজেদের দক্ষতা ও সক্ষমতার জায়গাগুলোকে আরও শাণিত করাই হবে আমাদের অগ্রগতির পথ।”
অনুষ্ঠানের সমাপ্তিতে মহাপরিচালক আশা প্রকাশ করে বলেন, “বাহিনীর প্রতি জনগণের যে আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে, সেটি আমাদের সযত্নে রক্ষা করতে হবে। তাহলেই বাহিনীর প্রত্যাশা ও লক্ষ্য সফলভাবে পূরণ সম্ভব হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ, উপমহাপরিচালক (প্রশাসন) কর্নেল মো: ফয়সাল আহাম্মদ ভূঁইয়া, উপমহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো: সাইফুল্লাহ রাসেল, উপমহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো: রফিকুল ইসলাম, উপমহাপরিচালক (ঢাকা রেঞ্জ) মো: আশরাফুল আলমসহ সদর দপ্তরের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।