মাওলানা গিয়াস উদ্দিন তাহেরী বলেছেন, কিছু পাগল আছে—খাওয়া দিলে খায়, না দিলে খায় না। তারা রাস্তায় মাথায় জট বাধা চুল নিয়ে ঘোরাফেরা করে। এক বিশেষ গোষ্ঠী এসব পাগলের চুল জোরপূর্বক কেটে দিচ্ছে, এমনকি মুন্ডনও করে দিচ্ছে। তাহেরীর অভিযোগ, এদের কারণে কবরের লাশও নিরাপদ নয়।
সম্প্রতি এক ওয়াজ মাহফিলে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি এসব কথা বলেন। ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবের ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, একটি বিশেষ গোষ্ঠী পাগলদের চুল কেটে ও লাশ পুড়িয়ে নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করছে।
তাহেরী বলেন, এরা সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করছে। কারও ব্যক্তিগত জীবনযাপন বা পোশাকের ধরন নিয়ে কাউকে জোর করা যায় না। কে পাঞ্জাবি পরবে আর কে শার্ট পরবে, সেটা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। জোর করে কারও চুল কেটে দেওয়া বা পোশাক পাল্টে দেওয়া স্বাধীনতার পরিপন্থী। তাই এসবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রয়োজন। তিনি বলেন, সব পাগলই আসল পাগল নয়, অনেক পাগল আছে যারা আল্লাহ ও নবীর প্রেমে পাগল।
তিনি অভিযোগ করেন, কবর থেকে লাশ তুলে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে—এমন নিন্দনীয় ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটেনি। এতে দেশের ঐতিহ্য বিনষ্ট হচ্ছে এবং ধর্মের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। আজ মানুষের স্বাধীনতা নেই বললেই চলে। পাগলের মাথার চুল কেটে তাদের নামে মসজিদ বানানো হচ্ছে, আবার বড় বড় মাজারের দানবাক্সও তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কোটি কোটি টাকার দানবাক্সের অর্থ তারা আত্মসাৎ করছে, অথচ মাজারকে তুচ্ছজ্ঞান করছে এবং সুন্নিদের মাজার পূজারী আখ্যা দিয়ে অপবাদ দিচ্ছে।
তাহেরী দাবি করেন, এসব ভণ্ডদের মুখ থেকে ইসলাম শোনার পর সাধারণ মানুষও বুঝতে পারছে, একমাত্র সুন্নিরাই সঠিক পথে আছে। সুন্নিরাই নবীর পক্ষের, তারাই মাজার রক্ষা করে এবং নবীর শাফায়াত লাভ করবে। যারা ধর্মের নামে অধর্ম করছে, তাদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এসব ভণ্ড মৌলভীরা যখন সিডর, আইলা, নারগিস, ভূমিকম্প বা ঘূর্ণিঝড় আসে তখন বসে রেকর্ডিং করে বলে—‘ওলি আল্লাহর বাংলাদেশ, শাহজালালের বাংলাদেশ, রহম করো আল্লাহ।’
তাহেরীর বক্তব্য, এসব লোকজনের বিচার একদিন হবেই। কর্ম অনুযায়ী বিচার হবে, হাশরের ময়দানে কঠিন জবাবদিহি করতে হবে। তিনি তাত্ত্বিক ভঙ্গিতে বলেন, হাশরের ময়দানে সবাই নাফসি নাফসি বলে কাঁদবে, তখন যারা নবীর দুশমন, তারা কিভাবে নবীর সামনে মুখ দেখাবে? দুনিয়াতে নবীর পক্ষ নিয়ে কথা বললে অনেকে ভণ্ড বলে, বেদাতি বলে বা নানা ফতোয়া দেয়। কিন্তু হাশরের ময়দানে আল্লাহ নবীর মর্যাদা এমনভাবে প্রকাশ করবেন, তখন বিরোধিতা করার কোনও সুযোগ থাকবে না।
এফপি/অআ