অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মামলায় সিবিআইয়ের চূড়ান্ত রিপোর্টে দায়মুক্তি পাওয়ার পরও স্বস্তি খুঁজে পাননি। সম্প্রতি এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, আইনি লড়াইয়ের সমাপ্তি পরিবারকে কিছুটা শান্তি দিয়েছে ঠিকই, তবে ব্যক্তিগত জীবনে সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতা কখনোই মুছে যাবে না।
রিয়া বলেন, “সেদিন আমাদের বাড়িতে সবাই কেঁদেছিল। আমি ভাইকে জড়িয়ে ধরে ভেঙে পড়েছিলাম। মা–বাবার দিকে তাকিয়ে বুঝলাম, আমরা আর আগের মতো নির্ভার পরিবার নই। সেই মুহূর্ত আমাদের চিরতরে বদলে দিয়েছে।”
ক্লিন চিটের খবর প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেননি রিয়া। তার মা টেলিভিশনে সংবাদ দেখে খবরটি জানান। তবে তিনি অপেক্ষা করেছিলেন আইনজীবীর নিশ্চয়তার জন্য। রিয়া বলেন, “মিডিয়া অনেক সময় সঠিক তথ্য দেয় না, তাই আমি নিশ্চিত হতে চেয়েছিলাম।”
দায়মুক্তির পর অনুভূতি সম্পর্কে রিয়া জানান, এটি ছিল “অদ্ভুত অভিজ্ঞতা।” তিনি বলেন, “ভেতরে জানতাম আমি কিছুই করিনি, তাই আইনগত স্বস্তি এলেও খুশি হতে পারিনি। সুশান্তকে হারানোর শোক কোনো কিছু দিয়ে পূরণ হবে না। আমি স্বস্তি পেয়েছিলাম শুধু বাবা-মায়ের জন্য। তারা সমাজে প্রতিদিন মানুষের মুখোমুখি হয়, তাদের জন্য জীবনটা খুব কঠিন হয়ে উঠেছিল।”
২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) রিয়াকে গ্রেপ্তার করে, অভিযোগ ছিল সুশান্তের জন্য মাদক সংগ্রহের। তিনি প্রায় ২৮ দিন বিচারিক হেফাজতে ছিলেন এবং ৭ অক্টোবর জামিন পান। পরবর্তী সময়ে ইডি, সিবিআইসহ একাধিক সংস্থা তদন্ত চালায়। দীর্ঘ পাঁচ বছরের আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০২৫ সালের ২২ মার্চ সিবিআই আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেয়। সেখানে বলা হয়, সুশান্তের মৃত্যু আত্মহত্যা, এতে কোনো অসদুপায় বা অপরাধ ছিল না। রিয়াকে সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
রিয়া চক্রবর্তী স্পষ্ট করেছেন, আইনের বিচারে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হলেও মানুষের দৃষ্টি ও সামাজিক বিচার আজীবন তাকে তাড়িয়ে বেড়াবে। তার ভাষায়, “মানুষ বলতো আমি দায়ী নই। কিন্তু সেই কথাগুলো আমাকে শান্তি দেয়নি। কারণ আমি জানি, আমি আমার সবচেয়ে কাছের মানুষকে হারিয়েছি।”
এফপি/রাজ