লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ফাজিল মিয়ার হাট পুরাতন জামে মসজিদের ইমাম মওলানা মোহাম্মদ উল্লাহকে ফুলের মালা দিয়ে গাড়িতে করে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে তরুণ মুসল্লী উদ্যোগে নগদ ৭৫ হাজার টাকাসহ মোটরসাইকেল বহর দিয়ে তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ২২ বছর ইমামতি করার পর ফুলের মালা দিয়ে গাড়িতে একটি মসজিদের ইমামকে রাজকীয়ভাবে বিদায় দেওয়া হয়েছে। ফাজিল মিয়ার হাট পুরাতন জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহকে শুক্রবার জুমার নামাজের পর গাড়িতে করে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। এ সময় গ্রামের নারী-পুরুষের কান্নায় এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়।
৭০ বছর বয়সী ইমাম মওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ রামগতি উপজেলার চরসিতা বাসিন্দা। তিনি ২০০২ সাল থেকে টানা ২২ বছর ধরে ফাজিল মিয়ার হাট পুরাতন জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বার্ধক্যজনিত কারণে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে তাঁর সম্মানে এ ব্যতিক্রমী বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এলাকাবাসী।
মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে ফুলের মালা দিয়ে গাড়িতে করে তাঁকে রামগতির চরসিতার নিজ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। সেই গাড়ির পেছনে ছিল গ্রামের যুবকদের মোটরসাইকেলের বহর। গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ ইমামকে বিদায় জানাতে রাস্তার দুই পাশে ভিড় করেন।
বিদায়ের সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে সালাম বিনিময় করছেন ইমাম মওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ।
ফাজিল মিয়ার হাট পুরাতন জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি এডভোকেট মনিরুল ইসলাম আবদুল মজিদ বলেন, 'ইমাম সাহেব ছিলেন আমাদের অভিভাবকতুল্য। তিনি শুধু ইমামতি করেননি; আমাদের জীবনের নানা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁর দীর্ঘ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আমরা এমন সম্মাননা দিয়েছি।
বিদায়ের পূর্বমুহূর্তে আবেগজড়িত কণ্ঠে ইমাম মওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, ‘জীবনের বড় একটি অংশ এই মসজিদ আর গ্রামের মানুষের মাঝে কেটেছে। আমি সারা জীবন দ্বীনের খেদমতে নিয়োজিত ছিলাম। মানুষ আমাকে এত ভালোবাসে আগে বুঝিনি। আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাই, তিনি আমাকে এমন সম্মান দিয়েছেন। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’
ফাজিল মিয়ার হাট এলাকাতে এর আগে কখনো এভাবে কোনো ইমামকে বিদায় নিতে দেখা যায়নি বলে জানান স্থানীয় লোকজন। মসজিদের ইমামের প্রতি মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এফপি/ অআ