ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান বর্বর গণহত্যা, অবরোধ এবং মানবিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে পারফর্মিং আর্ট ও কবিতা পাঠের ব্যতিক্রমী আয়োজন।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরের ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি ছিল ‘লিভ অ্যান্ড লাভ’ শিরোনামে। এতে পারফর্মিং আর্ট, কবিতা পাঠ ও আলোচনা মাধ্যমে গাজার পক্ষে সংহতি প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানের সূচনায় কবি ও চিত্রশিল্পী সায়লা সিমি নূর বলেন, ইসরায়েলের বর্বর অবরোধ ভাঙতে গত ৩১ আগস্ট সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গের নেতৃত্বে ৪৪টি দেশের ১০০টি জাহাজ মানবিক ত্রাণ নিয়ে রওনা হয়েছে। ছয় মহাদেশের শতাধিক অধিকারকর্মী এই মিশনে অংশ নিয়েছেন। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নামে এ উদ্যোগেও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। তবুও তারা থেমে যাননি। আমরা বাংলাদেশ থেকেও সেই প্রচেষ্টার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কবি, চিন্তক ও প্রাচ্যবিষয়ক রাজনৈতিক বিশ্লেষক জহির হাসান বলেন, গাজার মানুষকে ‘এ্যানিমেল’ আখ্যা দিয়ে সারা বিশ্বের চোখের সামনে নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। অথচ আমরা, যারা নিজেদের মানুষ দাবি করি, আজ চুপ হয়ে আছি। এটা আমাদের নৈতিক পরাজয়।
এই বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তিনি ফিলিস্তিনের কবি মোসাব আবু তোহার একটি অনুবাদ কবিতা পাঠ করেন।
অনুষ্ঠানে একটি প্রতীকী পারফর্মিং আর্ট পরিবেশন করা হয়। সেখানে দেখা যায়—একজন অতিথি পাথর নিক্ষেপ করছে বাড়ির মালিকের দিকে। অথচ তিনিই সেই অতিথি, যাকে বাড়ির মালিক দাওয়াত দিয়ে এনেছেন। অতিথি পরে বাড়ির মালিককে উচ্ছেদ করে বাড়িটি দখল করে নেয়। বাড়ির মালিক চিৎকার করে জনতার উদ্দেশ্যে বিচার চান, কিন্তু কেউ কথা বলে না। শেষে মালিক রুখে দাঁড়ালেও টিকে থাকতে পারেন না।
ইসরায়েলের দখলদারিত্বের প্রতীকী উপস্থাপনাটি পরিবেশন করেন শিল্পী সায়লা সিমি নূর ও কবি পলিয়ার ওয়াহিদ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি ও এক্টিভিস্ট দিদারুল ভূঁইয়া, কবি ও সাংবাদিক শাকিল মাহমুদ, শামস আরেফিন, এম এ মোমেন, সানাউল্লাহ সাগর, শোয়েব ইব্রাহিম, নকিব হাসান, জসিমউদ্দিন সুমগ্ন, মুনিয়া মাহমুদ, ফাহিম ফয়সাল, ফটোগ্রাফার কল্লোল কর্মকার, ড. আল ফাহাদ, শাহিন পারভেজ, আবু সুফিয়ান, ফরহাদ এইচ মজুমদার, জাহেদ নিয়োগী, জাকির হোসেন, আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন, এনায়েতুর রহমান, ফয়সাল এম সিফাত, হাসান ফয়সাল, জসিম বিশ্বাসসহ আরও অনেকে।
অনুষ্ঠান শেষে গাজার শহীদসহ পৃথিবীর সকল মজলুম জনগোষ্টীর জন্য দোয়া করেন তেজগাঁও মাদ্রাসার ছাত্র আবদুল গণি।
এফপি/এমআই