আজ ভয়াবহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ২১তম বার্ষিকী। ২০০৪ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলা চালানো হয়। এতে ২৪ জন নিহত হন, আহত হন শতাধিক। নিহতদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের নেত্রী আইভি রহমান। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান।
দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার পর ২০১৮ সালে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল–১ রায় দেন। এতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
তবে ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই রায় বাতিল করে সব আসামিকে খালাস দেন। রায়ে বলা হয়, মামলার তদন্তে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে এবং সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া ন্যায়বিচার পাওয়া সম্ভব নয়। হাইকোর্ট মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। চলতি বছরের ১ জুন আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল আবেদন মঞ্জুর করে। এরপর গত ১৭ জুলাই থেকে শুরু হয় আপিলের শুনানি।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের বেঞ্চ ইতিমধ্যে চার দিনের শুনানি গ্রহণ করেছে। গতকালও শুনানি হয়, আজও ধারাবাহিকভাবে শুনানি চলছে। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ। আসামিপক্ষে রয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও মোহিনুর রহমান।
রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, হাইকোর্টের রায়ে মারাত্মক ত্রুটি রয়েছে। তারা ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সাজা পুনর্বহালের দাবি করছে। অন্যদিকে আসামিপক্ষের যুক্তি, পরিকল্পনা বা হামলায় আসামিদের সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ নেই।
আজ ২১ আগস্ট। নিহতদের স্মরণে নানা কর্মসূচি পালন করছে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠন। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো এখনও চূড়ান্ত ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে।
এফপি/রাজ