বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা আপিলের শুনানি চলছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চে এই শুনানি শুরু হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।
অপরদিকে, আসামি পক্ষের হয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। এছাড়া বিএনপির পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, আমিনুল ইসলাম, মাকসুদ উল্লাহ, জাকির হোসেন ও আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস।
এর আগে গত ৩১ জুলাই এ মামলার দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়েছিল।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন এবং শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। শেখ হাসিনাসহ অনেকেই গুরুতরভাবে আহত হন; কেউ কেউ স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ববরণ করেন।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। একই মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী এবং বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
কিন্তু ২০২৪ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ ওই রায় বাতিল করে দেন। রায়ে বলা হয়, মামলার তদন্ত ও অভিযোগপত্র আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য নয়, ফলে পুরো বিচার প্রক্রিয়া অবৈধ। হাইকোর্টের এই রায়ে সব আসামি খালাস পান।
রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। চলতি বছরের ১ জুন আপিল বিভাগ সেই আপিলের অনুমতি দেয়। এরপর থেকে মামলার শুনানি চলছে।
১৯ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া শুনানিতে রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষ তাদের যুক্তি তুলে ধরছেন। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, হাইকোর্টের রায় আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং হামলার দায়ীদের বিচারের বাইরে রাখছে। অন্যদিকে আসামি পক্ষের দাবি, মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রমাণ আইনের চোখে গ্রহণযোগ্য নয়।
এফপি/রাজ